পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, দেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় বনসহ বিপন্ন বনাঞ্চল রক্ষায় সরকার কাজ করছে। তবে বন সংরক্ষণে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে ‘ইনডিজিনাস প্লান্টস ফর সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট’ শীর্ষক বার্ষিক উদ্ভিদবিজ্ঞান সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ ও বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটি যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের দুইশ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের টেকনিক্যাল সেশনে গবেষকরা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, দেশের সার্বিক বোটানিক্যাল ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে কিছু ভালো কাজ হচ্ছে। কিন্তু সরকারিভাবে আরও অনেক কিছু করার আছে। জনগণের মধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেনের গুরুত্ব এবং গাম্ভীর্য তুলে ধরতে হবে। বোটানিক্যাল গার্ডেন শুধু বিনোদনের স্থান নয়, এটি প্রকৃতি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
তিনি বলেন, শালবন পুনরুদ্ধারে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু দেশীয় গাছ রোপণ করলেই হবে না, এগুলো টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থাও জরুরি। সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই কোনো বনায়ন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, ঢাকাসহ দেশের নগর এলাকায় সবুজায়ন ও আরবান ফরেস্ট্রি প্রসারে পরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। সংবিধানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের অঙ্গীকার করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরায় বনায়ন করতে হবে। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন উজাড় হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বৃক্ষরোপণ নিশ্চিত করতে হবে।
সম্মেলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, অপরিকল্পিত নগরের জন্য অনেক মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সময় শাল গাছের প্রাচুর্য ছিল, ছিল বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। এখন আর শাল গাছ দেখা যায় না। আমরা ধীরে ধীরে প্রকৃতি থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। ডেকে আনছি আমার-আপনার ধ্বংস।
এ সময় বাংলাদেশ বোটানিক্যাল সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক এম. আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এম. মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আব্দুর রব প্রমুখ।