হাত ধরাধরি করে আসা বসন্ত উৎসব আর ভালোবাসা দিবসে ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালীতে এ বছর ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। যেখানে দম ফেলবার ফুরসত মেলে না ফুলচাষিদের, সেখানে এবার তাদের মুখে কালো মেঘের ছায়া।
বছরের সবচেয়ে বড় ফুলের ‘পিক সিজনে’ ফুলের বাজার তছনছ হয়ে গেছে। কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে চরম হতাশায় পড়েছেন এখানকার ৬ হাজার ফুলচাষি। এখানকার অন্যতম ফুলচাষি ইসমাইল হোসেন বলেন, ভালোবাসা দিবসে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মসজিদে খুতবায় ও ফেসবুকে না জায়েজ কাজ থেকে বিরত থাকার আহ্বান ফুল বাণিজ্যে ধস নামিয়ে দিয়েছে। এছাড়া একই দিন শবেবরাতের রাত হওয়ায়ও বাজারে প্রভাব পড়েছে। এর বাইরে এ বছর এ সময় শীত কম থাকায় ফুল বেশি ফোটায় বাজারে সরবরাহও বেড়ে গেছে। এতে ফুল বিক্রি ধারণাতীত কম হয়েছে।
গদখালী ফুলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাইকেল-ভ্যানে বাহারি ফুল নিয়ে বাজারে এসেছেন চাষিরা। তাদের কারো কাছে গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনিগন্ধা; কারো কাছে জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকাসহ বাহারি সব ফুল। দূরদূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা সেই ফুল কিনছেন। ফুল বেচাকেনার এমন হাঁকডাক যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের সড়ক ঘেঁষে গড়ে ওঠা ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের গদখালীতে। তবে হঠাৎ গরম পড়ায় ফুল ফুটে যাওয়ায় বাজারে ফুলের জোগানও বেশি।
গোলাপ, গ্লাডিওলাস, রজনিগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা গাঁদা ফুলসহ সব ফুলের দাম অস্বাভাবিক কমে গেছে। গত বছর এই দিনে গোলাপ প্রতি শ ২০০০-২৫০০ বিক্রি হলেও এ বছর তা মাত্র ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় নেমে এসেছে। জারবেরা গত বছর ৮০০-২০০০ হলেও এবার ৫০০-৮০০, গত বারের ৫০০-১০০০ টাকার রজনিগন্ধা এবার ১০০-৩০০, গত বারের ৪০০-৫০০ টাকার চন্দ্রমল্লিকা ২০০-৩০০, গত বারের ৮০০-২০০০ টাকার গ্লাডিওলাস এবার ৩০০-১০০০ এবং গত বছরের ৭০০-৮০০ টাকার প্রতি হাজার গাঁদার দাম এবার ২০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।