মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

রাজধানীতে আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল

আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:৩৩

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলি করে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামি খান মো. আক্তারুজ্জামানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন। 

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ইসিবি চত্বর এলাকায় এই মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এ সময় এলাকাবাসী আক্তারুজ্জামান ওরফে আক্তার হোসের ফাঁসির দাবি করেন।

মানববন্ধনে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আর্শিবাদ পেয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ইসিবি চত্বর এলাকার ত্রাস হয়ে উঠে আক্তার। গুম-খুন চক্রের গডফাদার এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা সঙ্গে জড়িত তিনি। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ইসিবি চত্বর এলাকায় কথিত অনলাইন প্রপার্টিজের অফিস করে বেসিক ব্যাংক থেকে প্রায় ১৩৬ কোটি টাকা ঋণ নেয় আক্তার। পরে সেই ঋণ পরিশোধ না করে বিদেশে টাকা পাচার করেন। এছাড়াও ইসিবি চত্বর এলাকার আশেপাশের শতাধিক অসহয় মানুষের জমি দখল করে নিঃস্ব করে দেওয়ার অভিযোগ করেছে তার বিরুদ্ধে।
আক্তারের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যা ও হামলার ঘটনায় মামলাও হয়েছে। 

জানা গেছে, আন্দোলনের শুরু থেকে ক্যান্টনমেন্ট ইসিবি চত্বর, মাটিকাটা ও ভাষানটেক এলাকায় আন্দোলনকারীদেরকে দমাতে তার নেতৃত্বাধীন কিশোর গ্যাং ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সাধারণ মানুষের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং আন্দোলনকারীদের হয়রানি করতে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানায় গত ৫ আগস্টের পূর্বে মামলা করে। সরকার পতনের দিন মিরপুর ১৪ নম্বরে বিজয় মিছিলরত ছাত্র জনতার উপর নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে ফজলু নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করেন। এই ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বরে ভাষানটেক থানায় হত্যা মামলা হলে তার ২২ নম্বর আসামি আক্তার। এছাড়াও এই আক্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ছাত্র–জনতা হত্যার একাধিক মামলা রয়েছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি যৌথবাহিনীর অভিযানে আক্তারকে আটক করা হলেও এলাকাবাসীর দাবি তিনি আত্মগোপনে থেকে আটকের নাটক করছেন।

মায়ের দোয়া হোটেলের মালিক ভুক্তভোগী স্বপ্না আক্তার বলেন, আক্তার হোসেন নিজেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মেয়ের উকিল শ্বশুর পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেছে। সাধারণ মানুষের জমি জোরপূর্বক দখলে নিতে থানা পুলিশ ও ডিবিকে ব্যবহার করেছে। এছাড়া আক্তারের বিরুদ্ধে কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করতেন। আক্তারুজ্জামানের হয়রানি থেকে বাঁচতে ও গ্রেপ্তারের দাবিতে ডিএমপি কমিশনারের কাছে পৃথক দু’টি লিখিত অভিযোগও দেয় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন ভুঁইয়া। এর প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার  করে। 

আরেক ভুক্তভোগী নারী বলেন, হত্যা মামলার আসামি আক্তারুজ্জামান সরকারের একাধিক মন্ত্রী, এমপি, মেয়র ও সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে তোলা ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তার সঙ্গে ছবির তালিকায় রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আসাদুজ্জামানের ক্যাশিয়ার ও গুন্ডা বাহিনীর একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ ছিল আক্তারুজ্জামানের হাতে। আসাদুজ্জামানের মেয়ের উকিল শ্বশুর বানানো হয় তাকে। 

আরেক নারী বলেন, সেনা সদস্য স্বামীর মিশনের টাকা দিয়ে ইসিবি চত্বরের পাশে আড়াই শতাংশ জমিতে বাড়ি নির্মাণ করি। ২০২৪ সালে বৃষ্টির কারণে বাসাতে পানি উঠে। পানি উঠে যাওয়ার কারণে অন্যত্র বাসা নেই। ২০২৫ সালের ২২ জানুয়ারি আক্তার  তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে বাসার সব লুটপাট করে নিয়ে যায়। আইনের সহযোগিতা চাইলেও থানা থেকে কোন মামলা নেয়নি।

ইত্তেফাক/এমএএম