বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (সোনারগাঁও জাদুঘর) আয়োজিত লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসবে ‘সুবর্ণগ্রাম সংস্কৃতি অঙ্গন’-এর উদ্যোগে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে সোনারগাঁয়ে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
লেখক ও সাংস্কৃতিক কর্মী শংকর প্রকাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন ‘সুবর্ণগ্রাম সংস্কৃতি অঙ্গন’-এর সভাপতি কবি শাহেদ কায়েস। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সোনারগাঁও সাহিত্য নিকেতনের সাবেক সভাপতি কবি রহমান মুজিব।
শাহেদ কায়েস তার বক্তব্যে বলেন, ‘সুবর্ণগ্রাম গত প্রায় দুই দশক যাবৎ সোনারগাঁয়ে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করে আসছে।
আমরা বিশ্বাস করি, সংস্কৃতিই সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। সূচনাকাল থেকেই সংস্কৃতি, বিশেষ করে লোকসংস্কৃতি মানব সমাজের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। লোককাহিনিগুলোর মাধ্যমেই মানুষেরা সমাজের মূল্যবোধ, বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যকে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছায়। সময়ের বিবর্তনে লোককাহিনি বিভিন্ন রূপ ধারণ করে।
তিনি বলেন, ‘যেমন মিথ, কিংবদন্তি, লোককাহিনি এবং প্রবাদ। যদিও লোককাহিনির এই রূপগুলোর প্রতিটিই স্বতন্ত্র, কিন্তু এই লোককাহিনি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধকে কেন্দ্র করেই বিকাশ লাভ করে। যে বিশেষ গুণটি লোককাহিনিকে বিশেষ করে তোলে তা হলো এর মানবতাবাদী সুর।’
রহমান মুজিব বলেন, ‘লোকসংগীত বাংলাদেশের সংগীতের একটি অন্যতম ধারা। এটি মূলত বাংলার নিজস্ব সংগীত। গ্রাম বাংলার মানুষের জীবনের কথা, সুখ-দুঃখের কথা ফুটে ওঠে এই সংগীতে।’
সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর ‘কল কল ছল ছল নদী করে টলমল/ ঢেউ ভাঙ্গে ঝড় তুফানে তে…’- এই দলীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। দলীয় সঙ্গীতে অংশগ্রহণ করেন উমা রায়, দোলন রানী, ভাবনা সূত্রধর, প্রিয়ন্তি আমিন পিউ, অমৃতা বর্মণ, স্নিগ্ধা বর্মণ, সেঁজুতি বর্মণ, রুপন্তি সরকার, দ্বৈতা দাস, সায়না সরকার, সান্ত্বনা চক্রবর্তী, স্মরণ চক্রবর্তী ও শংকর প্রকাশ।
একক সংগীত পরিবেশন করেন দোলন রানী, ভাবনা সূত্রধর, প্রিয়ন্তি আমিন পিউ, অমৃতা বর্মণ, রুপন্তি সরকার ও স্নিগ্ধা বর্মণ।
অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পী হুমাইরা জেসনিন ও সেঁজুতি বড়ুয়া, ছড়া-কবিতা আবৃত্তি করে রেহনুমা সাহরিন রিহা, মোহাম্মদ আদেল রহমান, আবরার হোসাইন পরশ ও পারিশা পারভেজ আঁখি।
অনুষ্ঠানের শেষ পরিবেশনা ছিল মূকাভিনয়। উজ্জ্বল উচ্ছ্বাসের রচনা ও নির্দেশনায় পর পর দুটি মূকাভিনয়— ‘ভিজুয়াল লাইফ’ এবং ‘মব জাস্টিস সিঁধচোর’ পরিবেশন করে ‘মাইম ফেইস, নারায়ণগঞ্জ’। মূকাভিনয় দুটিতে অংশ নেন মূকাভিনয়শিল্পী উজ্জ্বল উচ্ছ্বাস, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, আবদুল হান্নান সোহান, আব্দুল জব্বার, মৌন লাকি, কাসেম আলী ও মায়শা হক পাপড়ি।