ওমানের রাজধানী মাসকাটের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে চলছে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ লিগ ২-এর নবম রাউন্ড। সব ম্যাচ অনুষ্ঠিত হচ্ছে একই মাঠে। তাই ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে ব্যবহৃত পিচগুলোতেই খেলানো হচ্ছে।
শুকনা ও মন্থর পিচে স্পিনও ধরছে বেশ। আর তার সর্বোচ্চ সুবিধা পেতেই দুই প্রান্ত থেকেই স্পিনার ব্যবহার করেছেন ওমান অধিনায়ক যতীন্দর সিং। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিয়ে জোড়া বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছে ওমানের স্পিনাররা।
ওয়ানডে ইতিহাসে টানা দুই ম্যাচে স্পিনার দিয়ে প্রতিপক্ষদের অলআউট করা একমাত্র দল এখন ওমান। ওয়ানডে ম্যাচের এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ওভার পেসার বা ফাস্ট বোলার ব্যবহার না করার রেকর্ডটাও এখন মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির।
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ লিগ ২-এর নবম রাউন্ডে স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে খেলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও নামিবিয়া। গত রোববার এই রাউন্ডের তৃতীয় ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ৭ উইকেটে এবং গতকাল পঞ্চম ম্যাচে নামিবিয়াকে ২ উইকেটে হারিয়ে দেয় ওমান। দুটি ম্যাচই ছিল লো–স্কোরিং।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সবকটি উইকেট নিয়েছেন ওমানের চার স্পিনার। বাঁহাতি স্পিনার শাকিল আহমেদ নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। আরেক বাঁহাতি ওয়াসিম আলীর শিকার ১টি। এছাড়া অফ স্পিনার জয় ওদেররা ৩টি এবং লেগ স্পিনার সময় শ্রীবাস্তব নিয়েছেন ২টি উইকেট। ম্যাচটিতে ফাস্ট বোলার হাসনাইন শাহ ৩ ওভার ও মিডিয়াম পেসার সুফিয়ান মেহমুদ ৫ ওভার বল করলেও উইকেটের দেখা পাননি।
তবে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নামিবিয়ার বিপক্ষে কোনো পেসারকেই বোলিংয়ে আনেননি ওমান অধিনায়ক যতীন্দর। দুই পাশ থেকে লাগাতার স্পিনারদের হাতে বল তুলে দিয়েছেন। স্পিনারদের দিয়েই নামিবিয়াকে অলআউট করতে ওমানের লেগেছে ৩৩.১ ওভার।
মোট পাঁচ স্পিনার ব্যবহার করেছেন ওমান অধিনায়ক। বাঁহাতি শাকিল আহমেদ ও আমির কলিম, অফ স্পিনার জয় ওদেদরা ও সিদ্ধার্থ বুক্কাপত্তনম এবং লেগ স্পিনার সময় শ্রীবাস্তব। এই ৫ জন মিলেই নামিবিয়ার ১০ উইকেট নিয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে টানা দুই ম্যাচে স্পিনার দিয়ে প্রতিপক্ষদের অলআউট করার বিশ্ব রেকর্ড গড়েছে ওমান। আবার নামিবিয়ার খেলা ৩৩.১ ওভার কোনো ওয়ানডে ম্যাচে পেস বোলিং ছাড়া দীর্ঘতম ইনিংস।
পেসাররা এক ওভারও বল করেননি ছেলে ও মেয়েদের ওয়ানডে মিলিয়ে এমন ঘটনা ঘটল চতুর্থবার। ছেলেদের ওয়ানডেতে দ্বিতীয়বার।
সর্বশেষ এমনটা দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কীর্তিপুরে নেপালের বিপক্ষে ৩৫ রানে অলআউট হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, যা ওয়ানডেতে যৌথভাবে দলীয় সর্বনিম্ন। এই ‘মামুলি’ রান তাড়া করতে নেমে নেপাল জিতে যায় ৫.২ ওভারেই। নেপাল এত দ্রুতই ম্যাচ শেষ করেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক সৌরভ নেত্রবালকার লেগ স্পিনার তিমিল প্যাটেল ও বাঁহাতি স্পিনার নোসতুশ কেনজিগের বাইরে অন্য কারও হাতে বলই তুলে দেননি।
মেয়েদের ওয়ানডেতে পুরো ইনিংস স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করানোর প্রথম ঘটনা ২০১৭ সালের। কলম্বোর পি. সারা ওভালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের হয়ে বোলিং করেন তিন স্পিনার সানা মির, নাশরা সান্ধু ও সাদিয়া ইউসুফ। ভারতের লক্ষ্য ছিল মাত্র ৬৮ রানের, যা তারা ২২.৩ ওভারে পেরিয়ে যায়।
পরের ঘটনাটি গত বছর মিরপুরে বাংলাদেশ–অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অ্যালিসা হিলির অস্ট্রেলিয়াকে ৯৮ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছিল নিগার সুলতানার বাংলাদেশ। অতিথিদের জিততে লেগেছিল ২৩.৫ ওভার। ইনিংস জুড়ে বল করেছেন বাংলাদেশের পাঁচ স্পিনার—নাহিদা আক্তার, সুলতানা খাতুন, রাবেয়া খান, স্বর্ণা আক্তার ও ফাহিমা খাতুন।