অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া অঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত সৈকতে আটকে পড়া ৯০টি তিমির ভাগ্যে মৃত্যু ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই। সময় গড়ানোর সঙ্গে এমনটাই মনে করছেন দেশটির বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা।
তাসমানিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ বিভাগ জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে দ্বীপের পশ্চিম উপকূলের আর্থার নদীর কাছে দেড় শতাধিক তিমি আটকা পড়ে থাকতে দেখা যায়। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সেখানে ৯০টি তিমি রয়ে গেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা দুটিকে সমুদ্রে ফেরানোর পাঠানোর চেষ্টা করেছে। তবে বাতাস ও উত্তাল সমুদ্রের কারণে তৎক্ষণাৎ উদ্ধারকারীদের তীরে ফিরে আসতে হয়েছে।
তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের কর্মকর্তা শেলি গ্রাহাম বলেছেন, এটি বেশ রুক্ষ পরিবেশ। প্রাণীরা বেরিয়ে আসতে পারে না। তারা কেবল ঘুরতে থাকে এবং সৈকতের দিকে ফিরে আসে।
আকাশ থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, তিমিগুলো সৈকত বরাবর ছড়িয়ে পড়েছে, কিছু অর্ধেক বালিতে চাপা পড়েছে এবং অন্যরা অগভীর পানিতে জীর্ণ পাথরের কাছে আটকা পড়েছে।
শেষবার তাসমানিয়ায় এতগুলো তিমি আটকা পড়েছিল ৫০ বছর আগে ১৯৭৪ সালের সালের জুনে। তবে সে সময় কতগুলো তিমি বেঁচে ফিরেছিল, তা জানা যায়নি।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সর্বশেষ আটকে পড়া এই প্রাণীদের 'যন্ত্রণা কমাতে স্বেচ্ছামৃত্যুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে'। সৈকতে অনেক ঘণ্টা তারা এভাবে পড়ে থাকার পরে। তারা দিশেহারা, বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে...।
তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের লিয়াজোঁ অফিসার ব্রেন্ডন ক্লার্ক বলেন, দুর্গম স্থান হওয়ায় সেখানে ভালো যন্ত্রপাতিও পাঠানো সম্ভব হয়নি।
ক্লার্ক বলেন, তিমিগুলো আকারে বড়, ৫০০ থেকে প্রায় তিন টন ওজনের। জনসাধারণকে নিজেদের নিরাপত্তার কারণে সেখান থেকে দূরে থাকতে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল।
প্রাণী আচরণবিদ এবং সামুদ্রিক বিজ্ঞানীরা বলছেন, সৈকতে এভাবে তিমির বেঁচে থাকার হার কম। প্রাণীগুলো 'অবনতি শুরু হওয়ার আগে' স্থলে প্রায় ছয় ঘণ্টা বেঁচে থাকতে পারে।
তাসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ মেরিন অ্যান্ড অ্যান্টার্কটিক স্টাডিজের ড. অ্যাঙ্গাস হেন্ডারসন বলেন, তিমি কেন আটকে পড়ে, তা প্রায়শই পরিষ্কার নয়। তবে অনেক প্রাকৃতিক কারণ রয়েছে: যেমন অসুস্থ হওয়া, হারিয়ে যাওয়া বা দিশেহারা হয়ে পড়া। পাশাপাশি আবহাওয়া এবং চৌম্বকীয় অসঙ্গতির মতো অন্যান্য কারণও রয়েছে...।