রমজান মাস রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস। এ মাসে দিনের বেলা রোজা রাখা ফরজ, আর রোজা রেখে স্ত্রী সহবাস করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কেউ রোজা রাখা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সহবাস করে, তাহলে তার রোজা ভেঙে যাবে এবং এর পরিবর্তে কাজা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।
তবে রমজানের রাতে অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর থেকে সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত, স্ত্রী সহবাস করার বিধান রয়েছে।
অনেকে মনে করেন, সাহরি খাওয়ার পর এবং রোজার নিয়ত করে ফেলার পর আর স্ত্রী সহবাস করা যাবে না। কিন্তু এই ধারণা সঠিক নয়। কারণ, রমজানের রাতে খাওয়া-দাওয়া এবং স্ত্রী সহবাস—দুটোই বৈধ যতক্ষণ না সুবহে সাদিক হয়ে যায়।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন—
“রমজানের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন (সহবাস) হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খেয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তওবা কবুল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত রোজা পূর্ণ কর। আর তোমরা মসজিদে ইতেকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না।” (সুরা আল-বাকারা: ১৮৭)
আরও পড়ুন- রোজা রেখে সহবাস করা যাবে?
অর্থাৎ, সুবহে সাদিকের আগে পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া ও স্ত্রী সহবাস উভয়ই হালাল।
সাহরি খাওয়ার পরও, যদি সুবহে সাদিকের আগেই হয়, তাহলে স্ত্রী সহবাস করা সম্পূর্ণ বৈধ।
তবে সুবহে সাদিকের পর, অর্থাৎ রোজা শুরু হয়ে গেলে, স্ত্রী সহবাস করলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাফফারা আদায় করতে হবে।
ইতিকাফকারীদের জন্য, রমজানের রাতেও স্ত্রী সহবাস করা নিষিদ্ধ।
আরও পড়ুন- ফরজ গোসলের নিয়ম
রমজানের রাতগুলোর বিশেষ ফজিলত ও বরকত রয়েছে। তাই রাতের সময়টাকে ইবাদত, কোরআন তেলাওয়াত, দোয়া এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনায় কাটানো উচিত। তবে দাম্পত্য সম্পর্কের হকও ইসলামে স্বীকৃত, তাই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বৈধভাবে স্ত্রী সহবাস করা কোনো সমস্যা নয়।