শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

'অভিনয়টা বেশি চ্যালেঞ্জের পরিচালনার চেয়ে' 

আপডেট : ২১ মার্চ ২০২৫, ১১:১১

শরাফ আহমেদ জীবন একইসাথে একজন নির্মাতা ও অভিনেতা। ফিকশন নির্মাণের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বেশকিছু আলোচিত বিজ্ঞাপন নির্মাণ করেছেন তিনি। সমান তালে কাজ করছেন পর্দার সামনেও। বোরহান ভাই চরিত্রের মাধ্যমে বেশ সাড়া জাগিয়েছেন দর্শক মহলে। সব পরিচয় ছাপিয়ে তিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। আগামী ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে তার পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র 'চক্কর-৩০২'। সিনেমা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন টুম্পা দেবনাথ 

আপনার শুরুটা হয়েছিল টেলিফিল্ম নির্মাণের মধ্য দিয়ে, এরপর হঠাৎ-ই বিজ্ঞাপনের দিকে ঝুঁকলেন কেন? 
আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল 'ঘর নাই' টেলিফিল্ম নির্মাণের মধ্যে দিয়ে। এরপর বেশ কিছু টেলিফিল্ম ও নাটক নির্মাণ করেছি। কিন্তু অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল। ফিকশন দিয়ে জীবন চলবে না-এমন ভাবনা মগজে দানা বাঁধে। তারপর বিজ্ঞাপন নির্মাণে বেশি ব্যস্ত হয়ে যাই। এটা শুধু জীবিকার জন্যই আসলে করেছিলাম। আর নির্মাণে আসার বিষয়ে যদি বলি, আমি লিখতে পারি না, গাইতে পারি না; নির্মাণ যেহেতু একটু পারি, তাই এটা দিয়েই শুরু করি।
 
নির্মাণ এবং অভিনয় দুই ক্ষেত্রে কাজ করতে গিয়ে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন কি? 
যখন ডিরেকশন দেই তখন আমার টিম থাকে, এই কাজটা আমি সবার সাথে ভাগ করে করি। আবার যখন অ্যাক্টিং করি, তখন আমি ক্যামেরার সামনে থাকি। দুটি আসলে দুই ধরনের প্রস্তুতির বিষয়। সারারাত না ঘুমিয়েও আমি ডিরেকশন দিতে পারব। আবার অভিনয়ের ক্ষেত্রে মনোযোগটা খুব জরুরি। যখন ক্যামেরার সামনে থাকি তখন আমি একা, সবকিছু আমাকেই ফেস করতে হয়। আর যখন ডিরেকশন দেই-তখন আমার টিমের সাপোর্ট পাই। তবে অভিনয়টা বেশি চ্যালেঞ্জের পরিচালনার চেয়ে। 

বোরহান ভাই চরিত্রটাকে কমবেশি অনেকেই চেনেন, কিন্তু পর্দার পেছনের শরাফ আহমেদ জীবনকে লোকজন কি এতটা চেনেন? 
আমি যখন কাজ করতাম তখন এত সোশ্যাল মিডিয়া ছিল না, ইউটিউব ছিল না, ফেসবুক ছিল না। বিজ্ঞাপনে আসার পরে দর্শক আরো চেনে না কারণ, বিজ্ঞাপনে কোনো নাম যায় না। সেই জায়গা থেকে দেখা যায়, পর্দার পেছনের মানুষগুলো আসলে পেছনেই থেকে যায়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে, পর্দার পেছনের মানুষগুলো নিজেকে পর্দায় নিয়ে আসার যথেষ্ট চেষ্টা করে, কারণ এখনকার মানুষ বুঝে গেছে ফেস ভ্যালুটা অনেক জরুরি। কিন্তু আমাদের সেই সময়টা এরকম ছিল না। বোরহান ভাই চরিত্রটা আমাকে স্ক্রিনের সামনে আসতে সাহায্য করেছে এবং বোরহান ভাই থেকে শরাফ আহমেদ জীবনকেও এখন দর্শক চেনে। 

আপনার সিনেমা 'চক্কর ৩০২' নিয়ে মিডিয়া পাড়ায় বেশ আলোচনা হচ্ছে। এই সিনেমার গল্পটা কেমন? 
মানুষের সম্পর্কের নানা চড়াই-উতরাই এবং জীবনের পাওয়া না পাওয়ার গল্পে নির্মাণ করেছি সিনেমাটি। 

কবে নাগাদ মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি? 
ইতিমধ্যে টিজার ছেড়েছি। প্রথম গান 'কাউয়া কমলা খাইতে জানে না' রিলিজ হয়েছে। আশা করছি এবারের ঈদেই রিলিজ পাবে সিনেমাটি। 

'কাউয়া কমলা খাইতে জানে না' এই গানটিই কেন নির্বাচন করলেন? 
কাউয়া কমলা খাইতে জানে না, এই কাউয়া আসলে কাক না, মানুষের ভেতরে যে কিছু রিপু আছে সেটার বিভিন্ন রূপ। এই যে মানুষের লোভ, লালসা, স্বপ্ন, মিথ্যা আশার পেছনে ছোটা-কত টাকা হলে একজন মানুষ টাকার পেছনে ছোটা বন্ধ করবে? একটা সময়ে টাকা ভ্যালুলেস হয়ে যাবে, সম্পর্ক-ভালোবাসা এগুলোই থাকবে। এই জায়গা থেকে আমি আমার সিনেমার জন্য গানটিকে বেছে নিয়েছি। 

কাজের ক্ষেত্রে জনরুচি বুঝে কাজ করেন নাকি কাজের মাধ্যমে জনরুচি তৈরি করেন? 
যখন আমি অ্যাক্টিং করি তখন হয়তো অনেক কিছু রুচিবোধের বাইরেও করে ফেলি। কিন্তু যখন আমি ডিরেক্টর তখন আমার বুদ্ধি-বিবেচনাকে আমি প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। রাইট টাইমের একটা ব্যাপার থাকে। যখন কনটেন্ট বানাই, সেখানে গল্প বলার চেষ্টা করি। এটা কতটা হিট হবে তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়-আমি একটা গল্প বলতে চাই।

ইত্তেফাক/টিএইচ