শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

মির্জা আজম ও তার স্ত্রীর ১৯ বিঘা জমি জব্দ, ৩১ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৫, ১৯:৫৫

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনে জামালপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মির্জা আজম ও তার স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে জামালপুরের ১৯ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা তাদের ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেওয়া হয়েছে, এসব হিসাবে ৩ কোটি ৮০ লাখ ২৩ হাজার ৯৫৮ টাকা রয়েছে।

সোমবার (২৪ মার্চ) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, মির্জা আজমের নামে জামালপুরে সাড়ে ৫৯ শতক জমি জব্দ করা হয়েছে, এসব সম্পদের মূল্য ২৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। মির্জা আজমের ১৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে, এসব হিসাবে ১ কোটি ১২ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪ টাকা রয়েছে।

এছাড়া মির্জা আজমের স্ত্রী দেওয়ান আলেয়ার নামে জামালপুরে ১৭ দশমিক ৯২ বিঘা জমি জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও তার নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এসব হিসাবে ২ কোটি ৬৭ লাখ ২৭ হাজার ৯২৪ টাকা রয়েছে।

এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের সহকারী পরিচালক ফেরদৌস রহমান জমি জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আবেদন করেন। 

মির্জা আজমের বিষয়ে আবেদনে বলা হয়, মির্জা আজম সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাব খাটিয়ে নিজ নামে-বেনামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৬৭ হাজান ২০০ টাকা এবং তার মেয়ে আফিয়া আজম অপির নামে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৮৩ হাজার ৫৭ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেন। 

এসব সম্পদ নিজের দখলে রেখে, পরিবারের সদস্যসহ অন্যদের নামে ২০ কোটি ৭৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পত্তি হেবা বা দান বা বিনিময়ের মাধ্যমে হস্তান্তর ও রূপান্তর করেন।

নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং তার স্ত্রী আসামি দেওয়ান আলেয়াসহ তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৭২৫ কোটি ৭০ লাখ ৪২ লাখ ২৩২ টাকা জমা ও ৭২৪ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৭১৫ টাকা উত্তোলনপূর্বক অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে জ্ঞাতসারে তার অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করে অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মির্জা আজম কর্তৃক অর্জিত সব সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে প্রাপ্ত তার নিজ নামীয় ও তার কন্যা মির্জা আফিয়া আজমের নামীয় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ (ব্যাংক হিসাব) যেন তিনি অন্যত্র হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন সেজন্য তার এসব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ (ব্যাংক হিসাব) অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।

আলেয়ার আবেদনে বলা হয়, আলেয়া তার স্বামী মির্জা আজমের প্রভাব খাটিয়ে এবং তার সহযোগিতায় নিজ নামে-বেনামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৭১ হাজান ৯৯৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পত্তি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জন করেন। তা নিজের দখলে রেখে এবং তার নিজ নামে ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ১৮১ কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার টাকা জমা ও ১৭৯ কোটি ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ৪৯ টাকা উত্তোলনপূর্বক অস্বাভাবিক লেনদেনের মাধ্যমে জ্ঞাতসারে তার অপরাধলব্ধ অবৈধ অর্থ হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন এজন্য দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।

ইত্তেফাক/এমএস