সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ঈদে টানা ছুটি 

পর্যটক বরণে প্রস্তুত মেঘের রাজ্য সাজেক

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৯:১৬

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য নিয়ে হাতছানি দিয়ে ডাকছে হ্রদ-পাহাড়ের শহর পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি ও মেঘের রাজ্য সাজেক। পর্যটকদের জন্য ধুয়েমুছে প্রস্তুত করা হয়েছে সাজেকের ৮৮ রিসোর্ট-কটেজ ও রাঙ্গামাটি জেলা শহরের সকল হোটেল, মোটেল, রিসোর্টগুলো। এবার শুধু অপেক্ষার পালা পর্যটকদের বরণে।

জানা যায়, এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর ও সাপ্তাহিকলম্বা ছুটির সুযোগে দেশের দর্শনীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণপিপাসুদের ঢল নামার সম্ভাবনা রয়েছে। দীর্ঘ ছুটিকে উপভোগ করতে দেশীয় পর্যটকরা ছড়িয়ে পড়বে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র মেঘের রাজ্য সাজেক ভ্যালি এবং হ্রদ-পাহাড়ের শহর পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটিও প্রস্তুত রয়েছে। এখানকার রিসোর্ট ও কটেজগুলোর আগাম বুকিং হলেও তুলনামূলক একটু কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা আশাবাদী, ঈদুল ফিতরের দিন ঘনিয়ে আসতে আসতে শতভাগ বুকিং হয়ে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সাজেকে ৮৮টি রিসোর্ট ও কটেজ প্রস্তুত রয়েছে। যেখানে ২ হাজারের বেশি পর্যটক থাকতে পারবেন। সাজেকের নীলাচল ও সাজেক ভিউ পয়েন্ট কটেজের মালিক এস এম জিয়াউল হক যুবরাজ জানান, কটেজগুলো এখন পর্যন্ত আশানুরূপ বুকিং হয়নি। সাজেক আগুনে পোড়ার খবরে পর্যটকরা বিভ্রান্ত হয়েছে। আসলে বাস্তবতা এখানে ভিন্ন। সাজকের ৭৫ শতাংশ কটেজ অক্ষত আছে।

সাজেক রিসোর্ট কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা বলেন, ‘আগুনে পুড়ে যাওয়ার সংবাদগুলো এত বেশি প্রচার হয়েছে যে, মানুষ ভাবছে সাজেকে আর থাকার জায়গা নেই। আসলে এখানকার বাস্তবচিত্র ভিন্ন। এখনো ৮৮টি রিসোর্ট ও কটেজে ধারণক্ষমতা আছে ২ থেকে আড়াই হাজার পর্যটকের। পাশাপাশি খাবারদাবার থেকে শুরু করে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পর্যাপ্ত রয়েছে। আমরা আহ্বান করব, পর্যটকরা বিভ্রান্ত না হয়ে সাজেকে বেড়াতে আসুন।’

অন্যদিকে হ্রদ-পাহাড়ের শহর পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির সবুজ পাহাড়ের হাতছানিতে যেন ছুটে চলেছেন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ। কাপ্তাই লেকের স্বচ্ছ জলধারা ভ্রমণপিপাসুদের সত্যিই উদাস করে তুলেছে।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তে অবস্থিত পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি। এর উত্তরে খাগড়াছড়ি জেলা, দক্ষিণে বান্দরবান, পূর্বে ভারতের মিজোরাম রাজ্য আর পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলা। জেলার মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে পাহাড়ি কন্যা কর্ণফুলী নদী। কর্ণফুলী থেকে উৎপত্তি হয়েছে চেঙ্গী, মাইনি, কাঁচালং, সুবলং, রাইংখিয়ং, বরকল, হরিণা। এসব নদী মিলিয়ে গেছে কাপ্তাই লেকে। চারদিকে লেক পরিবেষ্টিত রাঙ্গামাটি জেলা গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ের সমন্বয়ে। পাহাড়গুলো সবুজ বনবাদারে ঘেরা। পাহাড়, বন আর স্বচ্ছ জলধারা মিলে সৃষ্টি হয়েছে রাঙ্গামাটির নৈসর্গিক আবেশ।

এবার ঈদে দীর্ঘ ছুটি থাকায় রাঙ্গামাটিতে পর্যটকের সমাগম বেশি হবে বলে আশা করছেন রাঙ্গামাটি শহরের পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে জেলা শহরের বিভিন্ন হোটেল মোটেলে ৪০/৫০ শতাংশ বুকিং হয়েছে।

রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘ঈদুল ফিতরে দীর্ঘ ছুটির কারণে এবার রাঙ্গামাটিতে উল্লেখজনক পর্যটকের আগমন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সে জন্য আমাদের অবকাঠামো, ঝুলন্ত সেতুসহ অন্যান্য সবকিছু নতুন করে সাজাচ্ছি। আশা করি, ঈদের ছুটিতে আমাদের যেসব সম্মানিত পর্যটক রাঙ্গামাটি বেড়াতে আসবেন, তারা প্রাণভরে রাঙ্গামাটি উপভোগ করতে পারবেন।’

ইত্তেফাক/এসএএস