রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

মোরসালিনদের ম্যাচে ফেরাতেই কি আল আমিনরা বেঞ্চে থাকেন 

আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:২০

গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে এশিয়ান কাপের বাছাই খেলায় ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ কি পূর্ণ শক্তি নিয়ে খেলতে পেরেছিল। হামজারা লড়াই করেছেন, আর তার সামনে থাকা শেখ মোরসালিন যতক্ষণ মাঠে ছিলেন তাকে কেউ খুঁজে পায়নি। ৮০ মিনিট মাঠে ছিলেন মোরসালিন। ম্যাচ রিভিউ করলে মোরসালিনের আমল নামায় কিছুই পাওয়া যায় না। যতটা সময় মাঠে ছিলেন প্রতিপক্ষের জন্য বিপজ্জনক কিছুই করতে পারেননি তিনি। ভালো বল বাড়াতে পারেননি। 

এতো বড় একটি ম্যাচ, গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা মোরসালিনকে প্রথম একাদশে রেখে ছিলেন। অথচ এই ফুটবলার নিজ ক্লাব, বসুন্ধরা কিংসে লিগের ম্যাচে একাদশের খেলোয়াড় না। এক দুইবার নেমেছিলেন খনিকের জন্য। বেশির ভাগ সময় ইনজুরিতে ছিলেন, তার ওপর পারিবারিক ঘটনায় মানসিক চাপে ছিলেন। ফুটবল খেলায় মন ছিল না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায় বিয়ে করেছেন তিনি, কিন্তু সেই বিয়ে নিয়ে নানা ঝামেলায় থাকতে হয়েছে মোরসালিনকে। 

সৌদি আরবে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে যাওয়ার আগে তার নামে যৌতুকের মামলা দিয়েছিলেন তারই স্ত্রী সেঁজুতি বিনতে। যে কারণে এবার সৌদি আরব থেকে শুরু করে ভারতের শিলং, কোথাও মোরসালিনকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। একে তো ইনজুরি থেকে উঠে আসা, তার ওপর পারিবারিক ঝামেলার মধ্যে মোরসালিন কীভাবে জাতীয় দলে পারফরম্যান্স করবেন সেটি আমলে না নিয়ে, যাচাই-বাছাই না করে ভারতের মতো বড় প্রতিপক্ষের ম্যাচে মোরসালিনকে নামিয়ে দিলেন কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা। 

নিষ্ক্রিয় মোরসালিনকে ৮০ মিনিট মাঠে রাখা হলো। মনে হলো বাংলাদেশ খেলেছে ১০ জন নিয়ে। ৮০ মিনিটে কী কী করেছেন মোরসালিন, সেটা কি ভিডিও অ্যানালিস্ট দেখেছেন। কোচকে জানিয়েছেন কিনা। আদৌ কি একাদশে খেলার মতো যোগ্য ছিলেন মোরসালিন। বড় ম্যাচে লড়াই করার মতো মানসিক এবং শারীরিকভাবে মোরসালিনের ফিটনেস আদৌ ছিল কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। 

তপু বর্মন একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে মোরসালিন ৫ গোল করেছেন।' প্রশ্ন উঠছে মোরসালিনকে কেন তার ক্লাব লিগের সব ম্যাচে একাদশে রাখেনি। ইনজুরি থেকে উঠে আসা ফুটবলার মাঠে নেমেই এক তুড়িতে মানিয়ে নিতে পারেন না। তাকে সময় দিতে হয়, ম্যাচ দিতে হয়। মোরসালিনকে ফিট হওয়ার জন্য হ্যাভিয়ের ম্যাচ দিলেন, এশিয়ান কাপের বাছাই ম্যাচে, ভারতের বিপক্ষে একাদশে রেখে। ভারতের বিপক্ষে মোরসালিন দেশের জন্য এতটুকু কাজ দেখাতে পারেননি।

এবারের লিগের প্রথম পর্বে ১০ ম্যাচ খেলে ৭ গোল করা আল আমিন।  

লাভ হয়েছে মোরসালিনের, অনেক দিন ম্যাচে না থাকার জড়তা কেটেছে। অথচ একজন প্রকৃত স্ট্রাইকারের অভাবে ভারতের বিপক্ষে বারবার গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন জনি, হৃদয়রা। একজন স্ট্রাইকার বেঞ্চে বসেই কাটিয়ে দিলেন। আল আমিন নামের স্ট্রাইকার এবারের লিগের প্রথম পর্বে ১০ ম্যাচ খেলে ৭ গোল করেছেন। তাকে একটি বারের জন্য মাঠে নামিয়ে সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলেন না কোচ। তাহলে কোচ কেন আল আমিনকে দলে নিয়েছিলেন। 

তার প্রতি যদি আস্থাই না থাকে, তাহলে দলে নেওয়ার দরকার কি ছিল। আল আমিনের মতো ফুটবলারদেরকে জাতীয় দলে নিয়ে বোকা বানাচ্ছেন বিদেশি কোচরা। যারা লিগের ম্যাচে বেঞ্চে বসে সময় কাটান তারা জাতীয় দলে গিয়ে একাদশে খেলছেন। অন্যদিকে আল আমিনরা নিজেদেরকে যাচাই করার সুযোগও পাচ্ছেন না। এতো দিন ধরে জাতীয় দলের দায়িত্ব পালন করেও কোচ হ্যাভিয়ের আস্থা রাখার মতো একজন স্ট্রাইকার কেন বের করতে পারলেন না।

ইত্তেফাক/জেডএইচ