কেউ বানাচ্ছে আইসক্রিমের কাঠি দিয়ে সেতুর আদল, আবার কেউ মেশাচ্ছে সিমেন্ট, বালি আর পানি। পুরকৌশলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গবেষণাধর্মী নানা আয়োজনে সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী জাতীয় কংক্রিট উৎসব-২০২৫।
প্রথম দিনের সেগমেন্টে ছিল ট্রাস তৈরির প্রতিযোগিতা, যেখানে আইসক্রিমের কাঠি দিয়ে বিভিন্ন মডেল তৈরি করেছেন অংশগ্রহণকারীরা। কেউ বানিয়েছেন সেতুর কাঠামো, কেউ ভবনের। যার মডেল বেশি ওজন নিতে পেরেছে সেই-ই বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়াও ছিল মর্টার ওয়ার্কেবিলিটি কম্পিটিশন, কংক্রিট সল্যিউশন আইডিয়া, আর্টিকেল রাইটিং ও ফটোগ্রাফি কন্টেস্ট। বিভিন্ন বিভাগে বিজয়ীদের জন্যে এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার চুয়েটের পক্ষ থেকে ছিল প্রায় ১ লক্ষ টাকার নগদ অর্থ পুরষ্কার।
পুরকৌশলীদের আন্তর্জাতিক পেশাজীবী সংগঠন আমেরিকান কংক্রিট ইন্সটিটিউটের (এসিআই) চুয়েট শাখা প্রতিবছরই এমন ব্যতিক্রমধর্মী বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
আয়োজনে অংশগ্রহণকারী চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী সম্প্রীতি দাস বলেন, প্রথমবারের মত এ উৎসবে যোগ দিয়ে ট্রাস প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলাম। পেশাগত জীবনে ও গবেষণায় এই অভিজ্ঞতা কাজে দিবে।
একই বিভাগের আরেক প্রতিযোগী নাফিস ইমতিয়াজ জানান, এমন আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পেরে বেশ ভালো লাগছে। দুটো সেগমেন্টে অংশ নিয়েছিলাম। অনেককিছু শিখেছি।
আরেক শিক্ষার্থী মৌমিতা রহমান বলেন, প্রতিযোগিতার ব্যবস্থাপনা খুব গোছানো ছিলো। আমার খুবই ভালো লেগেছে প্রথমবারের মতো নিজের হাতে ট্রাসের মডেল বানাতে।
এসিআই স্টুডেন্ট চ্যাপ্টার চুয়েটের সভাপতি জোহায়ের মাহতাব বলেন, চুয়েটে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হলো জাতীয় কনক্রিট উৎসব। আমাদের কার্যক্রম সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটি পুরকৌশলের শিক্ষার্থীদের গবেষণায় অনুপ্রেরণা যোগাবে, যার মাধ্যমে আমরা স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিভিন্ন জটিল সমস্যা সমাধানে পারদর্শী হয়ে উঠবো।
চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জিএম সাদিকুল ইসলাম বলেন, এ সংগঠনের যাত্রার শুরু থেকে আমরা নিয়মিতই বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আসছি। যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়, আমরা এখানে অনুরূপ আয়োজন করেছি। আমি মনে করি এগুলো শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও আগ্রহ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে।
জাতীয় কনক্রিট সল্যিউশনে বিজয়ী হয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিম কনক্রিট ক্র্যাশার, ২য় ও ৩য় হয়েছে বুয়েটের টিম লাইমএক্সকনক্রিট ও কনকর্ডিয়াম। জাতীয় মর্টার ওয়ার্কেবিলিটি কম্পিটিশনে বিজয়ী হয়েছে চুয়েটের টিম মিক্স উইজার্ড, ২য় ও ৩য় হয়েছে চুয়েটের ট্রাওয়েল টাইটানস ও রিসাইলেন্স।
এর আগে গত শুক্রবার এই আয়োজন শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা একক বা দলগতভাবে এতে অংশ নেয়। আয়োজনে মিডিয়া পার্টনার ছিল দৈনিক ইত্তেফাক এবং স্পন্সর হিসেবে ছিল হলিসিম, কনসোল ও এসিআই লিমিটেড।