ইউক্রেন সংঘাত অব্যাহত থাকলে রাশিয়া ওডেসা এবং খারকভ শহর দখল করতে পারে বলে বিশ্বাস করেন ফরাসি কর্নেল ও বিশেষজ্ঞ হার্ভ ক্যারেস।
বিশ্বের সমস্ত অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক পূর্বাভাস নিয়ে কাজ করা ফরাসি সংস্থা 'স্ট্র্যাটপোল'কে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, সংঘাতের আরও ধারাবাহিকতা ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণ পতনের কাছাকাছি নিয়ে আসছে। রাশিয়া সম্ভবত খারকভ এবং ওডেসার মতো শহরগুলো দখল করবে। ওডেসা রাশিয়ার জন্য মৌলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ক্যারেস উল্লেখ করেন, সংঘাতের অবসান ঘটানোর মধ্যেই ইউক্রেনীয়, ইউরোপীয় এবং আমেরিকানদের স্বার্থ নিহিত। তবে ইউরোপীয় দেশগুলো এবং ইউক্রেন ভিন্নভাবে কাজ করছে।
তার মতে, আসলে বলা যেতে পারে, মস্কো ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা বন্ধ করার চুক্তি মেনে চলছে, অন্যদিকে কিয়েভ রাশিয়ার অভ্যন্তরে জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে, বিশেষ করে ড্রোন ব্যবহার করে।
তিনি বলেন, কেন এটা ঘটছে। কারণ, আলোচনার বিষয়ে অবস্থানের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আমেরিকানরা আলোচনা শুরু করতে চায়, কারণ ডোলান্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধ শুরু করার অভিযোগ করে চলেছেন। রাশিয়ার জন্য, খুব দ্রুত সংঘাত শেষ করা কৌশলগতভাবে লাভজনক নয়, কারণ মস্কোর এখনো কিছু অঞ্চল মুক্ত করার আছে এবং তারা এখনো ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত করতে সক্ষম হয়নি।
ফরাসি বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, জেলেনস্কি আলোচনা থেকে উপকৃত হতে পারবেন না, কারণ নব্য-নাৎসিরা ইউক্রেনে অত্যন্ত প্রভাবশালী রয়ে গেছে এবং রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি তার অস্তিত্বের জন্য একটি 'শারীরিক হুমকি' তৈরি করে।
তার ভাষায়, ইউরোপীয়রা এই সংঘাতের ফলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউরোপের আগ্রহ হলো রাশিয়ার সাথে জ্বালানি সহযোগিতা পুনরায় শুরু করা।
বিশেষজ্ঞ আরও উল্লেখ করেছেন, রাশিয়ার সাথে আলোচনার সূচনা হয়েছে নতুন মার্কিন প্রশাসন, অর্থাৎ মার্কিন নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের মাধ্যমে। আলোচনা তিনটি বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে, যার মধ্যে রয়েছে - অঞ্চল, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক বিষয়। অঞ্চলগুলোর ক্ষেত্রে, রাশিয়ান এবং ইউক্রেনীয় নেতৃত্বের অবস্থানের মধ্যে একটি দ্বন্দ্ব স্পষ্ট। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে, ইউরোপে একটি নতুন নিরাপত্তা স্থাপত্যের জন্য রাশিয়ার দাবি তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ। নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে, যদিও রাশিয়ার অর্থনীতিতে এর নাটকীয় প্রভাব পড়েনি, তবুও তা তাৎপর্যপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ উভয়ের সঙ্গেই এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা প্রয়োজন। আলোচনায় ইউরোপের অংশগ্রহণ অনিবার্য হয়ে উঠেছে।