শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

কুয়েটে তালা ভেঙ্গে হলে ঢুকলেন শিক্ষার্থীরা, ভিসির পদত্যাগ দাবি 

আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৭:০৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ছয়টি আবাসিক হলের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ২টায় সংঘবদ্ধভাবে তালা ভেঙ্গে হলগুলোর মধ্যে প্রবেশ করেন তারা।

এদিকে, সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বন্ধ থাকা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও আবাসিক হল খুলে দিয়ে ক্লাস শুরু করার দাবি জানাতে থাকে। তবে, শিক্ষকরা তাতে সাড়া দেননি। একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধভাবে তালা ভেঙ্গে হলগুলোর মধ্যে প্রবেশ করেন।

ছবি: ইত্তেফাক

শিক্ষার্থীরা বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত হঠকারী। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পুনরায় তার দায়িত্ব-জ্ঞানহীন পরিচয় দিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
 
এর আগে, গত সোমবার কুয়েটের সিন্ডিকেটের সভায় গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাস ও বাইরে ছাত্রদল ও বহিরাগতদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ত পাওয়ায় তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া আগামী ২ মে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া এবং ৪ মে ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। সোমবার রাতে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ক্যাম্পাসে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা দেখা দেয়।

মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে জড়ো হতে থাকে। দুপুর ১টায় দুর্বার বাংলা ভাস্কর্যের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, যে ৩৭ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে তারা কারা? সেটি প্রশাসন না জানিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। শতাধিক শিক্ষার্থীদেরকে আহত করেছে যারা, তাদের সংখ্যা কোনো মতেই ৩৭ হতে পারে না।

তারা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ৩৭ জনের ভেতর আহত ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আছে কিনা সেটা প্রশাসনই ভালো জানে। শিক্ষার্থীরা সিন্ডিকেটের এমন সিদ্ধান্তকে হঠকারী আখ্যা দিয়ে উপাচার্যের সমালোচনা করেন। 

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাস ও বাইরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদল ও বহিরাগতদের সংঘর্ষের ঘটনায় গঠিত বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির কেউই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। এমনকি আহত ছাত্রদের সঙ্গেও কথা বলতে চায়নি। 

এদিকে, দুপুর ২টায় ১ দফা দাবিতে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের সামনে সমবেত হয় শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ, নতুন উপাচার্য নিয়োগ ও তার মাধ্যমে তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়। এর পরপরই শিক্ষার্থীরা ৬টি আবাসিক হলের তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করেন। তালা ভাঙার সময় কতৃপক্ষ কোনো বাধা দেয়নি।

এ বিষয়ে টেলিফোনে উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ জানান, সিন্ডিকেটের সভায় আবাসিক হল বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে। এটি তার একক সিদ্ধান্ত নয়। এখন আবাসিক হলের তালা ভাঙ্গা মানে শিক্ষার্থীরা কুয়েটের আইন ভঙ্গ করলো।

উল্লেখ্য, গত ১৩ এপ্রিল দুপুরে কুয়েটের কয়েকশো শিক্ষার্থী আবাসিক হল খুলে দেওয়া ও ক্লাস শুরু করার দাবিতে বন্ধ থাকা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। ওইদিন বিকাল থেকে তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন।

ইত্তেফাক/এসএএস