মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা: আগে বেচাকেনা ছিল বিনিময় প্রথায়, এখন নগদ টাকায়

আপডেট : ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:৪৯

চারদিকে ডাকহাক। কেউ এসেছেন চট্টগ্রাম থেকে কেউবা সিলেট থেকে। এভাবে  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কুলিকুন্ডা গ্রামের একটি স্কুল মাঠের মেলায় জড়ো হয়েছেন দুই শতাধিক ব্যবসায়ী। সবারই পসরা শুঁটকি।

নাসিরনগরের এ মেলার ঐহিত্য দীর্ঘদিনের। বরাবরে মতো এবারও পহেলা বৈশাখ ঘিরে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে দুই দিন ব্যাপী এই মেলা। মেলার প্রধান পণ্য শুঁটকি। বর্তমানে বাংলা সনের দ্বিতীয় দিনে এ মেলা শুরু হয়। যদিও পুরোনো পঞ্জিকা অনুযায়ী দিনটি পয়লা বৈশাখ। স্থানীয় জেলেরা পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্যতিক্রমধর্মী এই মেলা করে থাকেন। একসময় বিনিময় প্রথা দিয়ে লেনাদেনা হলেও এখন নগদ টাকায় হচ্ছে বেচাকেনা।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুইশ বছরেরও অধিক সময় ধরে এ মেলা আয়োজিত হচ্ছে।দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শুঁটকি ব্যবসায়ী ছাড়াও বাহারি শুঁটকির আকর্ষণে দূর-দূরান্ত থেকে ভোজন রসিকরা মেলায় আসেন শুটকি কিনতে। পছন্দের শুঁটকি ক্রয় করে তারা তৃপ্ত হন। প্রায় দুই শতাধিক নানান জাতের শুঁটকির পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা।

 প্রতিবছর পসরায় ঠাঁই পায় বোয়াল,গজার,শোল,বাইম, ছুড়ি, লইট্টা, পুটি ও টেংরাসহ নানা জাতের দেশীয় মাছের শুঁটকি। এবারও তেমনটাই দেখা গেছে।

তবে দেশী মাছের শুঁটকির কদর বেশী। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও আমদানি করা বিভিন্ন প্রজাতির শুটকি উঠে। মেলায় নাসিরনগর ও পার্শ্ববর্তী এলাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, সিলেট ও সুনামগঞ্জের ব্যবসায়ীরা শুঁটকি নিয়ে আসেন। সামুদ্রিক অনেক বিরল জাতের মাছের শুঁটকি ছাড়াও ইলিশ ও কার্প জাতীয় বিভিন্ন মাছের ডিমের শুটকি মিলছে এই মেলায়।

মেলায় শুটকি কিনতে আসা নুরপুর গ্রামের ফুলবাহার মেম্বার মতি(৬৫) বলেন, আমরা যখন ছোট তখন বাপ-দাদার সঙ্গে এই মেলায় এসেছি। আর এখনও  শুটকি নেয়ার জন্য মেলায় আসছি। ২০০ বছরের বেশি সময় ধরে নিয়মিতভাবে এই মেলা বসছে।

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলা থেকে মেলায় এসেছেন মহেশ্বর দাস। তিনি বলেন, এ মেলায় শুঁটকির বেচাকেনা ভালো হয়। ১৫ ধরনের শুঁটকি এনেছেন, যার দাম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা।

ইত্তেফাক/এপি