আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এর ওয়্যার হাউস থেকে প্রায় ৩০০ ঘনফুট কাঠ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা পালংখালী ইউনিয়ন ১৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকা থেকে এসব কাঠ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ১৪ এপ্রিল ‘নতুন রোহিঙ্গাদের শেল্টার নির্মাণে ফুঁসে উঠছে স্থানীয়রা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
কাঠ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিনুর রহমান জানান, ক্যাম্পের কাঁটাতারের ভেতর থেকে সামাজিক বনায়নের দুই ডাম্পার গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। যাচাই বাছাই করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে সামাজিক বনায়নের শত শত গাছকর্তন করে সওয়াব নামের একটি এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে বাধাগ্রস্ত করতে নতুন করে পালিয়ে ১২২টিরও অধিক শেল্টার নির্মাণ করে। সংস্থাটির বিরুদ্ধে পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বানচালের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
উদ্ধারকৃত গাছগুলো সাওয়াব নামক একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এর মাধ্যমে দাতা সংস্থা "আইওএম" এর ওয়্যার হাউসে জমা রাখা হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এ খবরে সরগরম হলে বনবিভাগের একটি দল এসব কাঠ উদ্ধার করে। উক্ত অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে সামাজিক বনায়নের বিপুল পরিমাণ গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। গাছ গুলো জব্দ করে বনবিভাগের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যেখান সরকার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করতে তোড়জোড় চালাচ্ছে, সেখানে সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে সাওয়াব নামক একটি এনজিও সংস্থা নতুন করে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য শেল্টার নির্মাণ করা রহস্যজনক ও প্রত্যাবাসন বিরোধী কার্যক্রম বলে মনে হচ্ছে। নির্মাণাধীন এসব ঘর উপড়ে ফেলে, নতুন করে বনায়ন সৃষ্টি না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
তিনি বলেন, ১৪ নম্বর আশ্রয়শিবিরের কাঁটাতারের সঙ্গে লাগোয়া ১২২টির অধিক শেড নির্মাণ করা হয়েছে নতুন করে। যা ২০০৮ সালের সৃজিত বন বিভাগের সামাজিক বনায়নের জায়গা জলধার ছিল। ওই জলাধার ভরাট করে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কাজ করছে সাওয়াব নামের একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও)’। নতুন করে তৈরি রোহিঙ্গা পল্লীটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আমেনা ভিলেজ’।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা হলে তিনি বলেন, নতুন করে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য বেশ কিছু শেড নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মাণের কাজ পেয়েছে ‘সাওয়াব’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। যদি বনায়নের গাছকর্তন ও জলধার ভরাট করা হয়ে তাকে তদন্তপূর্বক সংস্থাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয় বাংলাদেশিদের লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত রয়েছি।