শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে অল্প বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের পাকা ধান

আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ২২:৩০

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ফেলা বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে কয়েকশ’ একর জমির ধান ও শাকসবজি। এতে প্রতি বছর জীবিকা হারাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।

তাদের দাবি, গত দুইদিনের বছরের প্রথমে অল্প বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে নষ্ট হয়েছে প্রায় ২০ একরের বেশি জমির পাকা ধান। কিন্তু সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ তাদের।

তবে খালগুলো সংস্কারের আশ্বাস দিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার।

উখিয়া উপজেলার কুতুপালং কৃষক মোহাম্মদ আলী জানান, চলতি মৌসুমে মাছকারিয়া বিলে আমি ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছি। ধান পাকতে শুরু করেছে এমন সময় অল্প বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে ফসল গুলো তলিয়ে গেছে। 

একই কথা বলেন, আব্দুল মজিদ নামের আরেক কৃষক। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আসা বন্ধ না হলে এলাকার কৃষকরা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তার।

কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক রাশেদ ও আহমদ উল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছর বর্ষা ও ব্যুরো মৌসুমে ধান চাষ করে আমরা জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে একবারও ভালো মতো ফসল ঘরে তুলতে পারিনি। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পের বর্জ্য এসে ফসল গুলো নষ্ট হয়ে যায়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য আসা বন্ধসহ খাল খননের দাবী করেন তারা।

লম্বাশিয়া এলাকার কৃষক মোহাম্মদ সালাম চলতি মৌসুমে ৫ একর জমিতে ধান চাষ করেছেন। ফসলও ভালো হয়েছিল। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্য ভেসে এসে শেষ করে দিয়েছে জমির পাকা ধান। তার আক্ষেপ, অভিযোগ করেও কোনো ধরণের ক্ষতিপূরণ বা সমাধান পাননি।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, সামান্য বৃষ্টিতে ক্যাম্পের নালা উপচে ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ছে মানববর্জ্য। সেই সঙ্গে আছে প্লাস্টিক, পলিথিন ও মেডিকেল বর্জ্য। এ কারণে হুমকিতে জমির ধান আর সবজি ক্ষেত। অনেক জমিতে বর্জ্য জমে পচে যাচ্ছে ধান। এভাবে প্রতি বছর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বর্জ্যে চরম লোকসানে পড়তে হচ্ছে এখানকার কৃষকদের।

বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হলেও এখনও কোনো প্রতিকার মেলেনি বলে জানিয়ে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে এ বর্জ্য আসা বন্ধ করতে হবে। এছাড়া ড্রেন নির্মাণ ও খালগুলো সংস্কার করতে হবে। আর ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের আওতায় আনতে হবে।

একই দাবি করেছেন রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর শাহেদুল ইসলাম রোমান।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের খালগুলো খনন ও সংস্কারের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) একটি ফান্ডিং করেছে। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে।

ইত্তেফাক/এপি