খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (কুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদকে পদত্যাগ করতে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরুর ঘোষণা দেন।
রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এক ব্রিফিংয়ে এই সময় বেঁধে দেন। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে প্রতীকী গদিতে আগুন জ্বালানোর কর্মসূচি পালন করেন।
ব্রিফিংয়ের সময় শিক্ষার্থীরা ‘কী আছে ওই গদিতে?’, ‘হামলা মামলা বহিষ্কার অপবাদ, আর কত যুদ্ধে মিলবে তবে ইনসাফ’, ‘কুয়েট আজ টেস্ট কেইস, ভিসি টিকলে সারা দেশ’,‘তদন্ত রিপোর্ট সিসিটিভি ফুটেজ সন্ত্রাসীরা পায় কীভাবে’, ‘ভিসি তুই স্বৈরাচার, সময় থাকতে গদি ছাড়’, ‘এইখানে সমস্ত ক্ষমতাধর নিজেরে ভাবতেছে ঈশ্বর’, ‘আরও করবি দমন–পীড়ন অপসারণ অপসারণ’ প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোকজন আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে। গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
এর মধ্যে, গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন। গত বুধবার দুপুরে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের মিছিলের পরপরই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিপক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।