মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে মারামারির মামলায় আসামি হুমায়ন মিয়াকে ধরার পর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সায়মা আক্তারকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিংগাইর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পার্থ শেখর ঘোষের বিরুদ্ধে।
রোববার (২০ এপ্রিল) এ ঘটনায় সায়মা আক্তার মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। শনিবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে আহত ওই নারী সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।
আহত সায়মা আক্তার সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের হুমায়ন মিয়ার স্ত্রী।
আহত সায়মা আক্তারকে সহযোগিতা করতে আসা সোনিয়া আক্তারকে নামের এক নারী ও তার দেড় বছরের ছেলেকে ২১ ঘণ্টা থানা-হেফাজতে আটকে রাখার অভিযোগ করা হয়েছে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজমের বিরুদ্ধে। সোনিয়া আক্তার একই মামলার আসামি ওয়াজ উদ্দিনের মেয়ে।
জানা যায়, গত শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মাসুদ বাদশার ওপর হামলা মামলার আসামি হুমায়ন মিয়াকে গ্রেপ্তারে তার বাড়িতে অভিযান চালান সিংগাইর থানার এসআই পার্থ শেখর ঘোষ। অভিযানে গ্রেপ্তার হন হুমায়ন এবং তাকে পরানো হয় হাতকড়া। তবে এ সময় পুলিশের সঙ্গে আসামির ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে আসামি পালিয়ে যায়।
পরিবারটির অভিযোগ, এতে ক্ষিপ্ত হন এসআই পার্থ শেখর ঘোষ এবং আসামির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সায়মা ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এতে আহত হন সায়মা।
পুলিশ সুপারকে দেওয়া অভিযোগপত্রে সায়মা বলেন, এসআইয়ের ধাক্কায় পড়ে গিয়ে আহত সায়মাকে সহযোগিতা করতে আসেন প্রতিবেশী সোনিয়া আক্তার ও আরিফ নামের দুজন। তখন ওসির নির্দেশে তাদের আটক করে থানায় নেওয়া হয়। পরে দেড় বছরের ছেলেসহ সোনিয়া আক্তারকে ২১ ঘণ্টা থানায় আটকে রাখা হয়। আরিফকে চালান করা হয় আদালতে।
সায়মার আরও অভিযোগ, এ ঘটনার পর সিংগাইর থানার ওসি জেওএম তৌফিক আজম সায়মা আক্তারের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হুমকি দিয়ে এসেছেন। পালিয়ে যাওয়া আসামি হুমায়ন আত্মসমর্পণ না করলে পরিবারের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে হুমকি দেন।
ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে এসআই পার্থ শেখর ঘোষ বলেন, আসামি হুমায়নকে গ্রেপ্তার করতে গেলে তার পরিবারে সদস্য এবং আশপাশের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে মব সৃষ্টি করে। তারা হুমায়নকে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। আসামির স্ত্রী সায়মাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়নি।
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেওএম তৌফিক আজম বলেন, ছেলেসহ ওই নারীকে ২১ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়নি। থানার আনার পর তার পরিবারের সদস্যরা ছেলেকে মায়ের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য থানায় আনেন। ছেলে মায়ের সঙ্গে গারদে দেখা করে। কোনোভাবেই শিশুকে ২১ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়নি। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে সোনিয়ার সম্পৃক্ত না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোসাম্মৎ ইয়াছমিন খাতুন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।