নতুন করে বিশাল শুল্ক আরোপ এড়াতে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সীমিত করার জন্য অন্য দেশকে চাপ দিচ্ছে ওয়াশিংটন। পালটা ব্যবস্থা নিচ্ছে চীনও। সোমবার চীন ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘তুষ্ট’ করতে দেশগুলোর বিরুদ্ধে পালটা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে বলেছে, এর ফল ভালো হবে না।
চীন কী বলেছে?
ব্লুমবার্গের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মাসের শুরুতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘোষণা করা শুল্ক এড়াতে চাইলে দেশগুলোকে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণের জন্য চাপ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই চীনও পালটা হুঁশিয়ারি দিল। গতকাল সোমবার চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট মন্তব্য করেছে এই বলে, ‘তুষ্টি শান্তি আনবে না এবং আপসকে সম্মান করা হবে না।’ অন্যান্য দেশগুলোকে অন্যদের ক্ষতি করে সাময়িক স্বার্থপরতা করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে চীন। বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে, এমন কাজ কোনো দেশ করলে চূড়ান্তভাবে সেটা দুই দিক থেকেই ব্যর্থ হবে এবং অন্যদের ক্ষতি করবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘চীনের স্বার্থের বিনিময়ে (যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো যে কোনো পক্ষের (দেশের) দৃঢ় বিরোধিতা করে চীন।’ এভাবে কাজ করা যে কোনো দেশের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে পারস্পরিক প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছে চীন।
এ মাসের শুরুতে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেছিলেন, নতুন শুল্ক এড়াতে প্রায় অর্ধশত দেশ তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে মার্কিন সয়াবিন এবং চাল আমদানি বাড়ানোর কথা বিবেচনা করছে জাপান। দক্ষিণ কোরিয়া বলেছে যে, তারা একটি পরিকল্পনার রূপরেখা দিয়েছে। আলোচনার ভিত্তি হিসেবে শূন্য শুল্কের প্রস্তাব দিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিংতে। ইন্দোনেশিয়া জানিয়েছে, মার্কিন খাদ্য ও পণ্য আমদানি বৃদ্ধি এবং অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি কমানোর পরিকল্পনা করছে দেশটি।
হুঁশিয়ারি ট্রাম্পেরও
শুল্কের পর এবার দেশগুলোকে শুল্ক বহির্ভূত অপরাধ নিয়েও হুঁশিয়ারি আমেরিকার। রবিবার এ ধরনের আটটি অপরাধের একটি তালিকা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। যেখানে দেশগুলোকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, উপরোক্ত অপরাধগুলো করলে আমেরিকার সঙ্গে আজীবনের মতো সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে! আটটি অপরাধের তালিকায় রয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে মুদ্রার হার বদল, পণ্যের ওপর আমদানি শুল্কের মতো মূল্যযুক্ত কর (ভ্যাট) চাপানো, উৎপাদন মূল্যের কমে রপ্তানি এবং অন্যান্য সরকারি ভর্তুকি, প্রতিরক্ষামূলক কৃষি ব্যবস্থা (যেমন ইউরোপে জিনগতভাবে উৎপাদিত ভুট্টা না থাকা), প্রতিরক্ষামূলক প্রযুক্তি (জাপানের ‘বোলিং বল’ পরীক্ষা, যা ব্যবহার করে জাপান মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলোকে জাপানি গ্রাহকদের কাছে বিক্রির জন্য প্রতারণা করে বলে অভিযোগ), জাল নোট তৈরি, পাইরেসি এবং শুল্ক এড়াতে দফায় দফায় পণ্য রফতানি। —ডয়চেভেলে
