সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

কুয়েটে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি

দ্বিতীয় দিনে অসুস্থ অনশনরত কয়েকজন শিক্ষার্থী

আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:১৯

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে পূর্বনির্ধারিত আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। অনশনরত শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ অসুস্থ হয়েছেন। দাবি পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা আন্দোলনের মধ্যে গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারে শুরু হয় তাদের অনশন। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ২৪ ঘণ্টা।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের এক দফা এক দাবি, ভিসির পদত্যাগ। দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবে। আমাদের চারজন এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ দপ্তর থেকে অনশন ভাঙানোর তৎপরতা চালাচ্ছের। প্রস্তাব দিয়েছেন আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, আলোচনার সময় এখন আর নেই। আমরা অনেক দিন ধরে আমাদের পরিস্থিতির কথা বলেছি। আমরা স্যারদের সঙ্গে বসার অনেক চেষ্টা করেছি। আমাদের কথা শোনা হয়নি।

ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক আবদুল্লাহ ইলিয়াস আক্তার বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার একটি সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা তাদের বলেছি, আলোচনার মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে আন্দোলন আবার দানা বাঁধতে থাকে। গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন। বুধবার দুপুরে উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দেন।

ইত্তেফাক/এমএএস