পাশাপাশি দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দুই প্রতিষ্ঠানের মাঠের আয়তন প্রায় ৩ একর। কিন্তু এই বিশাল মাঠে বন্ধ খেলাধুলা-শরীরচর্চা। কেননা সপ্তাহে পাঁচদিন এই মাঠে বসছে বাজার, বাকি দুদিন গরুর হাট।
স্কুল মাটে হাট-বাজার বসানোর এমন চিত্র লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের শিয়ালখোওয়া এলাকায়।
ওই এলাকার দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি হলো শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও অপরটি শিয়ালখোওয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এদের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২২৩ জন শিক্ষার্থী ও স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৬৫০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি রয়েছে তিনটি কেজি স্কুল ও একটি মাদ্রাসা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে এই মাঠে। মূলত এ কারণেই স্কুল মাঠে হাট-বাজার বসানোর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্থানীয়দের আপত্তি উপেক্ষা করেই বসানো হচ্ছে এই হাট-বাজার। এতে একদিকে দৈনন্দিন পাঠক্রমে বিঘ্ন ঘটছে, অন্যদিকে বন্ধ হয়ে পড়েছে খেলাধুলা ও শরীরচর্চা। অথচ ২০২৪ সালে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা আন্দোলন করে স্কুল মাঠটিকে হাটমুক্ত করেছিল। এরপর থেকে তারা সেই মাঠে নিয়মিত খেলাধুলা করতো। তবে গত ১৬ এপ্রিল থেকে আবারও হাট-বাজার বসাতে শুরু করেছে ইজারাদার।
শিয়ালখোওয়া হাটের ইজাদার আসাদুল হক হিরু সাংবাদিকদের জানান, হাটের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বহু বছর ধরে স্কুল মাঠে হাট বসানো হচ্ছে। স্থানীয় দ্বন্দ্বের কারণে গত বছর স্কুল মাঠে হাট বসানো হয়নি। এখানে হাট বসানোর দাবি এলাকার ৯৫ শতাংশ মানুষের। এই হাট স্থানীয় অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত। আমি নিয়মনীতি মেনে সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে হাট বসাচ্ছি।
শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাসেম আলী জানান, শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা করতে হলে হাটমুক্ত স্কুল মাঠ থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে খেলাধুলার চর্চা করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের মাঠে হাট বসানো হচ্ছে কিন্তু আমরা কিছুই করতে পারছি না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানিয়েছি।
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা অফিসার মুজিবুর রহমান বলেন, অনেক স্কুল মাঠ থেকে হাট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনও অনেক স্কুল মাঠে হাট বসানো হচ্ছে। যেসব স্কুল মাঠে হাট বসানো হচ্ছে, সেখানকার শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। শিয়ালখোওয়া গ্রামে স্কুল মাঠ থেকে হাট অপসারণ করবে উপজেলা প্রশাসন।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা জানান, আমরা হাট ইজারা দিয়েছি। তবে স্কুল মাঠ ইজারা দেইনি। হাটের জায়গা সংকটের কারণে ইজারাদার স্কুল মাঠে হাট বসাচ্ছেন। আগেও এই স্কুল মাঠে হাট বসেছিলো।
স্কুল মাঠ থেকে হাট অপসারণ করা হবে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হাটের ইজারাদার ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথ বৈঠক করে এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।