জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দিন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসীবকে ‘গেট আউট’ বলে নিজের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে এক শিক্ষার্থীর সাইকেল চুরি হওয়ায় নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবিতে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ইভানের সঙ্গে সাইকেল চুরি হওয়া ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীও ছিলেন। অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিষয়ে রেজিস্ট্রারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব কি ভাত-রুটির ব্যবস্থা করা? গেট আউট, একে বের করে দাও।' এ ঘটনার একটি অডিও রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসেছে, যেখানে রেজিস্ট্রার ও ইভানের কথোপকথন স্পষ্ট শোনা যায়।
ইভান তাহসীব জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার অভাবে শিক্ষার্থীদের সাইকেল হারিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার অনুরোধ জানালে রেজিস্ট্রার উল্টো ব্যক্তিগত দায় বলে তা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কিং শুধুই অফিসিয়াল গাড়ির জন্য। শিক্ষার্থীরা এখানে সাইকেল রাখে অবৈধভাবে।'
এ সময় ইভান পাল্টা প্রশ্ন করেন, 'তাহলে একজন শিক্ষার্থী টিউশনে যাবে কীভাবে?' রেজিস্ট্রার উত্তরে বলেন, 'ওটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ খাবারের দায়িত্ব নেওয়া না।' ইভান বলেন, 'এই ছেলেটি নিজের খরচ চালায়, বাসায়ও টাকা পাঠায়। বিশ্ববিদ্যালয় কি শিক্ষার্থীদের সামান্য নিরাপত্তাও দিতে পারবে না?'
রেজিস্ট্রার তখন আরও রেগে গিয়ে বলেন, 'তোমাদের আগে ভাবা উচিত ছিল কোথায় ভর্তি হবে। গ্রামের স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারতে।' এরপর তিনি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে বলেন, 'একে বের করে দাও।'
এ ঘটনায় রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দীনের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন দুর্ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, 'যে প্রশাসনিক সংস্কারের জন্য ছাত্রসমাজ লড়াই করেছিল, এই রেজিস্ট্রারের আচরণ তা ব্যঙ্গ করছে। আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।'
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, 'আমরাও তার রূঢ় আচরণের শিকার হয়েছি। আন্দোলনের ফলেই তিনি এই চেয়ারে বসেছেন, সেটাই যেন ভুলে গেছেন।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, 'ঘটনার বিষয়ে আমি রেজিস্ট্রার ও ইভানের সঙ্গে কথা বলেছি। এমন আচরণ কাম্য নয়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।'