ছয় দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে সব পরীক্ষা ও ফরম পূরণ কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে কারিগরি সংস্কার কমিশন গঠন ও কুমিল্লার কর্মসূচিতে হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার ঘোষণাও দেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দিনব্যাপী ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত প্রতিনিধি সম্মেলন শেষে রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। গত ১৬ এপ্রিল থেকে তারা দেশব্যাপী জোরালো কর্মসূচি শুরু করে। শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে এবং দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত রূপরেখা প্রণয়ন কমিটির প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার আন্দোলন স্থগিত করা হলেও পরদিনই তা প্রত্যাহার করে নতুন করে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তারা।
সংবাদ সম্মেলনে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মাশফিক ইসলাম দেওয়ান। তিনি বলেন, “আমাদের মহাপরিচালক প্রথমে ছয় দফা দাবির যৌক্তিকতা মেনে নেওয়ার কথা বললেও পরে এক সংবাদমাধ্যমে কিছু দাবি অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন। এমন বক্তব্য আমাদের ছাত্র সমাজের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই আমরা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আজকের এই সমাবেশের উদ্দেশ্য—দেশজুড়ে আমাদের ঐক্য প্রদর্শন।”
রাজশাহী বিভাগের প্রতিনিধি ইউসূফ আলী বলেন, “পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সব পরীক্ষা ও ফরম পূরণ কার্যক্রম বর্জন করা হয়েছে। একইসঙ্গে সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যতদিন না সংস্কার কমিশন গঠন ও কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিচার হবে, ততদিন এই তালাবদ্ধ কর্মসূচি চলবে।”
ময়মনসিংহ বিভাগের প্রতিনিধি শাহাজাদা আহমেদ বলেন, “আমরা কোনো কোটার পক্ষে নই, আবার কোনো কোটা দাবিও করছি না। এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। এটি আমাদের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা আমাদের আন্দোলনকে কোটা দাবি হিসেবে দেখাচ্ছেন। ১৯৯৪ সালের ১৯ মে জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য উপসহকারী প্রকৌশলীর পদ দশম গ্রেডে নির্ধারিত ছিল। আমরা সেই অধিকারই পুনরায় চাইছি।”
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, দাবিগুলোর মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।