বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

লোহাগড়ায় অসময়ে ভাঙছে স্রোতহীন মধুমতী, বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:৫৬

নড়াইলের লোহাগড়ার মধুমতী নদীতে অসময়ে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে নদীতে কোনো স্রোত নেই, তবুও থেমে নেই কয়েকটি গ্রামে নদীভাঙন। কোনো কোনো এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া বালুর বস্তাগুলো নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। ফলে আগের বস্তা সরে গিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে ভাঙন। এমন দৃশ্য দেখা গেছে, লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের কাশিপুর, মাকড়াইল, রামচন্দ্রপুর ও নওখোলা গ্রামে। 

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের চারটি গ্রামের ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি একের পর এক নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে ১৯৪৫ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত মাকড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আশপাশের তিনটি স্কুল, কয়েকটি মসজিদ, আশ্রয়ণ প্রকল্প এবং গ্রামীণ সড়ক। বর্ষা মৌসুমে মধুমতী নদীতে ভাঙন দেখা দিলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কোনো জায়গায় বালুর বস্তা ফেলে বাঁধ নির্মাণ করায় ভাঙন কিছুটা রোধ হয়েছিল। তবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ইজারাকৃত ও ইজারাবহির্ভূত স্থান থেকে বালু উত্তোলনের কারণে বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ ভেঙে পড়েছে। যে কারণে এ বছর বর্ষা মৌসুম আশার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে।

শালনগর ইউপির কাশিপুর গ্রামের আমেনা বেগম বলেন, ‘মধুমতী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণেই এ এলাকার ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে। কোথাও গিয়ে নতুন করে বাড়িঘর করার মতো জমি তাদের নেই। নেই। তবে এবার বর্ষা মৌসুম এলে সবকিছু চলে যাবে মধুমতী নদীতে।’

মাকড়াইল গ্রামের ফজল মৃধা বলেন, মধুমতী নদীতে আমাদের কয়েক একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। আমার ভাই ইতিমধ্যে বাড়িঘর ভেঙে অন্যত্র চলে গেছে। নদী থেকে বালু তোলার কারণে মাকড়াইল গ্রামের বেশ কিছু বাড়ির সামনের বাঁধ ভেঙে পড়েছে।

লোহাগড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রিয়াদ জানান, মধুমতী নদী ভাঙনের কারণে শালনগর ইউনিয়নের চারটি এলাকার বালুমহলের ইজারা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কেউ যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নড়াইল জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুমার সাহা বলেন, নিয়ম না মেনে বালু উত্তোলনের কারণে আমাদের নির্মিত প্রতিরক্ষা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে প্রশাসনের সহযোগিতায় ইজারাকৃত ও অনিয়মিত বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বর্ষা মৌসুম আশার আগেই ঐ এলাকায় পানি বাঁধ নির্মাণে কাজ শুরু করা হবে।

ইত্তেফাক/এসএএস