কয়েক লাখ রোহিঙ্গার পানির চাহিদা মেটাতে স্থানীয় গ্রামের নলকূপ ও পুকুর ব্যবহার করায় ঠিকমতো পানি পাচ্ছেন না স্থানীয়রা। এতে খাবার পানির ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, টেকনাফ পৌরসভা, সদর, হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাংয়ে, উখিয়ার রাজাপালং, পালংখালি ও জালিয়াপালং ইউনিয়নে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গ্রামের এক-তৃতীয়াংশ মানুষও ঠিকমতো খাবার পানি পাচ্ছে না।
স্থানীয়রা জানান, তীব্র গরমে পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন এনজিও সংস্থা গ্রামে যাদের বাড়িতে গভীর নলকূপ আছে তাদের থেকে পানি কিনে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এখন সারাদিনে নলকূপে এক বালতিও পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
হোয়াইক্যংয়ের বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, আমাদের গ্রামে যাদের বাড়িতে গভীর নলকূপ আছে, তারাই শুধু খাবার ও রান্নার জন্য পানি পাচ্ছেন। যাদের গভীর নলকূপ আছে তাদের বাড়ি থেকে কোনো রকম এক বালতি পানি এনে রান্নার কাজে ব্যবহার করছি।
টেকনাফ পৌরসভার বাসিন্দা রহিম উল্লাহ বলেন, গভীর নলকূপ থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শত শত লিটার পানি প্রতিদিন বিক্রি করা হচ্ছে। এর ফলে পৌরসভাতে তীব্র খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। যাদের বাড়িতে গভীর নলকূপে পানি পাওয়া যাচ্ছে, সেখান থেকে এক বালতি পানি নিতে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।
পালংখালির রহিমা বেগম বলেন, গত এক মাস ধরে বাড়ির নলকূপ থেকে ঠিকমতো পানি উঠছে না। পানি নিচের স্তরে পড়ে গেছে। এভাবে পানি নিয়ে কষ্ট পাচ্ছি। এরমধ্যে পুকুরও শুকিয়ে গেছে।
পালংখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম জাতীয় কমিটির মহাসচিব গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দিন দিন খাবার পানির সংকট তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে এবার গরমে নলকূপের পানি নিচের স্তরে চলে গেছে। অপরদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শত শত লিটার পানি গ্রামের গভীর নলকূপ থেকে লোকজন এনজিওদের কাছে বিক্রি করছেন। এ বিষয়ে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, পৌরসভাসহ যেসব গ্রামে খাবার পানির সংকট তৈরি হয়েছে, সেখানে পানি দেওয়ার চেষ্টা করছি। এরই ধারাবাহিকতায় কয়েকটি এনজিওর সহযোগিতায় পৌরসভায় যেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট সেখানে দেওয়া হচ্ছে। আরও যেসব গ্রামে পানির সংকট আছে সেখানেও পানির ব্যবস্থা করা হবে।