শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

স্বস্তি নেই সবজিতে, বেড়েছে মাছের দাম 

আপডেট : ০৩ মে ২০২৫, ০৯:৩৩

দেশে বোরো মৌসুম শুরু হওয়ায় রাজধানীর বাজারে চালের দাম কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চাল ইরি/স্বর্ণার দাম কেজিতে দুই টাকা কমেছে। সরু চাল মিনিকেটের দাম কমেছে আরো বেশি। তবে নাজিরশাইলের দাম কমেনি। এ ছাড়া, চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব ধরনের সবজি। বেড়েছে মুরগি ও মাছের দামও। 

শুক্রবার (২ মে) রাজধানীর শান্তিনগর, তুরাগ এলাকার নতুন বাজার ও কাওরান বাজারে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামের এ চিত্র পাওয়া যায়। ব্যবসায়ীরা বলে বলেন, বোরো মৌসুম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে হাওরাঞ্চলে ধান কাটা প্রায় শেষ। দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও বোরো কাটা শুরু হয়েছে। নতুন ধানের চাল ইতিমধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে চালের দামে। 

গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের চালের মধ্যে মোটা চাল ইরি/স্বর্ণা ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে দুই টাকা কম। মাঝারি মানের চাল পাইজাম/লতা বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। এছাড়া, মিনিকেট চাল কেজিতে চার থেকে পাঁচ টাকা কমে ৭৪ থেকে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে এটা নতুন মিনিকেট চাল বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন। পুরোনো মিনিকেট চাল আগের দরেই ৭৮ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৯৫ টাকা কেজি। 

তুরাগ এলাকার নতুন বাজারের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের স্বত্বাধিকারী সাদ্দাম হোসেন বলেন, অনেকদিন ধরে চালের দাম চড়া ছিল। এখন তা কমতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, বোরো মৌসুমের নতুন চাল বাজারে আসছে। সামনে চালের দাম আরো কমতে পারে বলে তিনি জানান। এদিকে চালের বাজারে স্বস্তি ফিরলেও আগের মতই চড়া দরে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। প্রতি কেজি ৬০ টাকার নিচে কোনে সবজি নেই বললেই চলে। 

সাদ্দাম বলেন, গতকাল বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে বেগুন, বরবটি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, করলা, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল, পটোল, লতি, ঢ্যাঁড়শ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। তবে পেঁপে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজির মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। কাঁকরোলের দাম আবার ব্যাপক চড়া। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। সজনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, টম্যাটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। 

শান্তিনগর বাজারের সবজি ব্যবসায়ী তোয়াব আলী বলেন, শীতমৌসুম চলে যাওয়ায় সবজি বাজারে যে স্বস্তি, তা চলে গেছে। বাজারে সবজির সরবরাহ এখন তুলনামূলক কম। গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা সহনীয় হবে। 

তোয়াব বলেন, গতকাল বাজারঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের চড়া দামে খুব বেশি হেরফের হয়নি। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৬০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরু-খাসির মাংসের দামে হেরফের হয়নি। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০ থেকে ৭৮০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের দামে কিছুটা চড়াভাব দেখা গেছে।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের মাছের কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের মাছের মধ্যে চাষের রুই, কাতল ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি, শিং ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, কই ২২০ থেকে ৩০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ইত্তেফাক/টিএইচ