বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

সাতকানিয়ায় হেলে পড়েছে সেতু, ঝুঁকি নিয়ে চলছে পারাপার

আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ১৮:১০

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার চরতী ইউনিয়নের দক্ষিণ ব্রাহ্মণ ডেঙ্গা ছড়ার উপর নির্মিত সেতুটি এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। ২২ বছর আগে নির্মিত সেতুটি সংস্কার না করায় সেতুটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, সাঙ্গু নদী থেকে আসা জোয়ার ভাটার পানি আর বৃষ্টির কারণে সেতুটি দুইপাশ ৩-৪ ফুট মাটির নিচে দেবে গিয়ে হেলে পড়েছে। দুই পাশের সংযোগ সড়ক থেকে সেতুটি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সেতুটি পুন:নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলে একাধিকবার জানিয়েও কোনো সুরাহা করতে পারেননি।

চরতী ও দ্বীপ চরতী এলাকাবাসী এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু পার হয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক হাটের দিন কয়েক হাজার মানুষ এ সেতু দিয়ে চলাচল করে থাকেন। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষের চলাচল করে থাকেন। 

গত রোববার (৪ মে) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হেলেপড়া সেতুটির পূর্ব পাশে ৩-৪ ফুট মাটির নিচে ডেবে গিয়ে হেলে গিয়েছে। সেতুর পশ্চিম পাশে ১০ ফুট ও পূর্ব পাশে ৬ ফুট মাটি সরে গিয়ে সংযোগ সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী ইজ উদ্যোগে সংস্কার যাতায়াত করছেন। এ অবস্থায় যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, দক্ষিণ ব্রাহ্মণ ডেঙ্গা ছড়ার এই ব্রিজ দিয়ে বেশির ভাগ সময় বিভিন্ন বাহন গাড়ি চলাচল করতো। আর সাধারণ মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করতেন। সেতুটি অকেজো হওয়ার পর হতে গাড়ি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত ফসল হাটে বেচাকেনা করা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চরতী এলাকার দক্ষিণ ব্রাহ্মণ ডেঙ্গা এলাকার বয়োবৃদ্ধ হাফেজ আহমদ, মিলন তালুকদার, রতন দাস, মোহাম্মদ সোলেমান, সুকুমার দাস জানান, এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন কিন্ডার গার্ডেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেসরকারি স্কুল,মাদ্রাসা ও কলেজের প্রায় ১ হাজার শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হয়। কোমলমতি শিশুদের কথা চিন্তা করে সেতু কর্তৃপক্ষ দ্রুততম সময়ে সংস্কার করার জোর দাবী জানান।

চরতী ইউনিয়নের ঈন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেতুটি ধ্বসে যাওয়ার কারণে শুষ্ক মৌসুমে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারলেও বর্ষাকালে তারা লেখাপড়া শিখতে যেতে পারেন না। যত দ্রুত সম্ভব সেতু সংস্কারের দাবি শিশু শিক্ষার্থীদের।

উপজেলার চরতী ইউনিয়নের সমাজসেবক ইন্দ্রজিত দাশ গুপ্ত জানান, সেতুটি পুন:নির্মাণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকৌশলী, কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন ও এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দরখাস্ত দেওয়া হয়েছে।

চরতী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হানিফ চৌধুরী জানান, গত বছর সেতুটি কিছুটা সংস্কার করা হলেও বন্যায় তা ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দরখাস্ত দিয়েছেন।

উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কান্তি দে জানান, কালভার্টের পুন:নির্মাণের একটি দরখাস্ত হাতে পেয়েছি। উপজেলায় এখন নতুন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগে নেওয়া হচ্ছে। ওই প্রকল্প গুলোতে উক্ত কালাভার্টটি অন্তর্ভুক্ত করার কাজ প্রক্রিয়াধীন।

ইত্তেফাক/এএইচপি