রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেটানোর পরিকল্পনার একটি কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। স্ক্রিনসটগুলোতে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে কথোপকথন করতে দেখা গেছে।
সেখানে একজন বলেছেন "ক্যাম্পাসের বাইরে ভেতরে না মামা এদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই পিটাতে হবে"। শাখা ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এসব আলাপ হয়। যেখানে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকও যুক্ত আছেন। আজ সোমবার ৫ মে সকালে দুটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে, গত রোববার (৪ মে) রাবি রেজিস্ট্রারের বাসভবনে ককটেল হামলা, আবাসিক হলে কুরআন পোড়ানো এবং একাডেমিক ভবনে পূজার ব্যানার ছেঁড়াসহ সকল ন্যক্কারজনক ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এই প্রোগ্রামে ব্যাপক সংখ্যক বহিরাগত স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল। যা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা করে।
স্ক্রিনশটে কথোপকথন করতে দেখা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. তুষার শেখ, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব, কর্মী হাসিবুল ইসলাম হাসিবকে।
সেখানে হাসিবুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল ক্যাম্পাসে আসেন এই বট বাহিনীর ছেলেগুলাকে চিহ্নিত করে দিন। এক সালাকেও ছাড় হবে না। ক্যাম্পাসের বাইরে বের হবেনা? সবগুলারে একটা একটা করে ধরে ছিঁড়ে ফেলে দিবো
আহসান হাবিব বলেন, যাচাই-বাছাই ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সংগঠন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানিকর ও মিথ্যা পোস্ট এপ্রুভ করায় এদের বিরুদ্ধেও মামলা করা যাবে।
তুষার শেখ বলেন, আগামীকাল ক্যাম্পাসে আসেন এই বট বাহিনীর ছেলেগুলাকে চিহ্নিত করে দিন। এক সালাকেও ছাড় হবেনা। ক্যাম্পাসের বাইরে ভেতরে না মামা এদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই পিটাতে হবে।
আহসান হাবিব আবার বলেন, কিন্তু বাদী হবে কে? এদের বিরুদ্ধে মামলা করা মানে শিবিরের বিরুদ্ধে মামলা করা।
অন্য আরেকটি স্ক্রিনশটে দেখা গেছে সেখানে অধিকাংশ মেসেজগুলো মুছে ফেলা হয়েছে। তবে একটি মেসেজ দেখা যায়। সেখানে তুষার শেখ লিখেছেন, গায়ে হাত দেওয়া অন্যায় ঠিক। কিন্তু এদেরকে পিটানো ছাড়া কোনভাবেই সোজা করা সম্ভব নয়। এদেরকে পিটুনি দিলে সব ঠিক।
এবিষয়ে জানতে ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. তুষার শেখকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
রাবি ছাত্রদলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট ভাইরাল বিষয়টি স্বীকার করে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব বলেন, আমি শুধু আমার মতামত দিয়েছি। গ্রুপে এমন অনেক ছেলেরা আছে যারা ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত না।
ফাঁস হওয়া স্কিনশট এডিট করা উল্লেখ করে ছাত্রদল কর্মী হাসিবুল হাসান বলেন, ‘রাবি ছাত্রদল’ নামের গ্রুপটি ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত কারোর না। মেসেজগুলো ইডিট করা।
এ বিষয়ে রাবি ছাত্রদলের আহবায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবার গ্রুপে আমি একটা স্কিনশর্ট দেখলাম এবং আমি কয়েকজনকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি তারা তা অস্বীকার করেছে আর দ্বিতীয়ত হলো যাদের নামে এই তথ্য পাওয়া গেছে তারা কেউ ছাত্রদলের দলীয় লোক নয়। এবং যাদের নাম পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।