রাশিয়া জানিয়েছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ইউক্রেনীয় বাহিনী কর্তৃক পাঠানো অন্তত ২৩২টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। এসব ড্রোনের কিছু রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর দিকে উদ্দেশ্য করে পাঠানো হয়েছিলো বলে দাবি করেছে রাশিয়া। এর ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে মস্কোর তিনটি প্রধান বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন, রাজধানীতে ঢোকার আগেই তিনটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়। এই হামলার ফলে ডোমোদেদোভো, ভনুকোভো এবং শেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়, যদিও কিছুক্ষণ পরে বিমান বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে, ইউক্রেন দাবি করেছে যে তাদের ড্রোন হামলায় রাশিয়ার ওরিওল অঞ্চলে অবস্থিত একটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানার দিকে লক্ষ্য করে পাঠানো হয়েছিলো। এই কারখানাটি রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ সরবরাহ করে।
তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ক্রমেই ড্রোন-নির্ভর হয়ে উঠেছে। যুদ্ধের শুরুর দিকে যেখানে মুখোমুখি লড়াই ছিল মুখ্য, এখন সেখানে ড্রোন হামলা হয়ে উঠেছে একটি কৌশলগত হাতিয়ার। যুদ্ধক্ষেত্রে উভয় পক্ষই এখন ড্রোন ব্যবহার করে শত্রুপক্ষের ভেতরে গভীরভাবে আঘাত হানার চেষ্টা করছে। এই প্রযুক্তির বিস্তার রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়কেই ড্রোন উৎপাদন ও মোতায়েনের নতুন কৌশল খুঁজতে বাধ্য করেছে। ড্রোন প্রতিহত করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ইলেকট্রনিক জ্যামিং, কৃষকদের শটগান।
সেনারা ড্রোন হামলার কারণে মানসিক চাপে ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে সৈন্যরা টয়লেট বা যানবাহনের মধ্যে হামলার শিকার হচ্ছেন, গাড়ি থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন, যা এই যুদ্ধের নির্মম বাস্তবতাকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী সামনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অগ্রসর হচ্ছে। রাশিয়াপন্থী যুদ্ধ ব্লগাররা বলছেন, রুশ সেনারা পূর্ব ইউক্রেনের ডোনেটস্ক অঞ্চলে পোকরোভস্ক এবং কোস্টিয়ানটিনিভকার মধ্যবর্তী এলাকায় ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা লাইন ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকতে সক্ষম হয়েছে। তথ্যসূত্র: রয়টার্স