শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

রাবিতে ১২টি স্থাপনার নাম পরিবর্তন, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ১৩:৩৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১২টি ভবন ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) অনুষ্ঠিত ওই সভায় পুনঃনামকরণের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন রাবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ।

তিনি জানান, সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নতুন নাম রাখা হয়েছে বিজয়-২৪ হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল হয়েছে জুলাই-৩৬ হল।

এছাড়া, সৈয়দ নজরুল প্রশাসন ভবন এখন প্রশাসন ভবন-১, সৈয়দ মনসুর আলী প্রশাসন ভবন হয়েছে প্রশাসন ভবন-২। তাজউদ্দীন আহমেদ সিনেট ভবন হয়েছে শুধু সিনেট ভবন। শেখ কামাল স্টেডিয়াম হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্টেডিয়াম।

ড. কুদরত-ই-খুদা একাডেমিক ভবন এখন জাবির ইবনে হাইয়ান ভবন, আর ড. ওয়াজেদ মিয়া একাডেমিক ভবন হয়েছে জামাল নজরুল ভবন। কৃষি অনুষদ ভবন এর নতুন নাম কৃষি ভবন।

শেখ রাসেল মডেল স্কুল হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মডেল স্কুল। কাজলা গেইট এর নামকরণ হয়েছে শহীদ সাকিব আঞ্জুম গেইট এবং বিনোদপুর গেইট এর নতুন নাম শহীদ আলী রায়হান গেইট।

তবে এসব নাম পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক ও ক্ষোভ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার লিখেছেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন কোন যুক্তিতে করা হলো? শিক্ষার্থীদের মতামত নেওয়া হলো কি? প্রশাসনের এ সিদ্ধান্ত কি সত্যিই যৌক্তিক নাকি সুযোগ নিয়ে ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা?' তিনি আরও বলেন, '৭১ আমাদের ভিত্তি, ৭১-কে ঘিরে বিদ্বেষমূলক বার্তা ভালো কিছু নির্দেশ করে না।'

অন্যদিকে শিক্ষার্থী নুর আহসান মৃদুল ব্যঙ্গ করে লেখেন, 'নাম পরিবর্তনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কত শতাংশ মস্তিষ্ক ব্যবহার হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।'

এর আগে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যখন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, শেখ রাসেল মডেল স্কুল, শেখ কামাল স্টেডিয়ামসহ কয়েকটি স্থাপনার নামফলক ভেঙে ফেলেন। তখন থেকেই নাম পরিবর্তনের দাবি উঠে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে।

সেই ঘটনার পর প্রায় তিন মাস পেরিয়ে প্রশাসনের এই পদক্ষেপে বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে আবারও তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ইত্তেফাক/টিএইচ