সাভারের বিরুলিয়া এলাকায় কৃষিজমি ও জলাশয় ভরাট, সরকারি খাল দখল, অবৈধ লে-আউট এবং অনুমোদনহীন আবাসন প্রকল্প পরিচালনা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রেলিক সিটির চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ও চিহ্নিত ভূমিদস্যু নূরুজ্জামানসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।
রোববার রাজউকের চেয়ারম্যানের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন রাজউকের কানুনগো মো. সালাউদ্দিন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের করা এই মামলায় আরো আসামি হিসেবে রয়েছেন-রেলিক সিটির পরিচালক শাব্বির হোসাইন, মো. শরীফ, ভবানীপুরের রুহুল আমিন, নাজমুল, মাসুম।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু চক্রের সদস্য। তারা রাজউকের অনুমোদন ছাড়াই বিরুলিয়ার কুমারন, রাজারবাগ, সাধাপুর, চাকুলিয়া, চান্দপাড়া, রাজাসন, নিকরাইল, গান্ধারিয়া ও বিলবাগিলসহ ১০টি মৌজার প্রায় ৮,২৫১ বিঘা কৃষিজমি নিজেদের নামে দাবি করে প্রবাসীদের কাছে প্লট বিক্রি শুরু করে।
এছাড়া আসামিরা সংরক্ষিত জলাধার ও বন্যাপ্রবাহ অঞ্চলে বালু ফেলে জমি ভরাট করে এবং তা লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী ভাগ করে বিক্রির জন্য বিজ্ঞাপন প্রচার করে। অথচ ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান অনুযায়ী এসব এলাকা কৃষি ও জলস্রোত সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত। রাজউকের পক্ষ থেকে একাধিক বার মৌখিক ও লিখিত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও তারা তা উপেক্ষা করে অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকে।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, রাজউক যখন ২২ মে সকাল ১০টায় এলাকাটিতে অভিযান চালাতে যায় তখন আসামিরা সন্ত্রাসী ভাড়া করে অভিযান কার্যক্রমে বাধা দেয় এবং রাজউকের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় সাক্ষীদের জীবননাশের হুমকি প্রদান করে। এমনকি গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপরও হামলা চালানো হয়। এ বিষয়ে সাভার থানার অফিসার ইনচার্জকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে রাজউকের অনুমোদন না নিয়ে গড়ে ওঠা নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের বিরুদ্ধে সাভারে অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। গতকাল দুপুরে সাভার উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের জিনজিরা মৌজায় পরিচালিত এই অভিযানে অন্তত পাঁচটি ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে ফেলা হয় এবং ভবনগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বেলায়েত হোসেন। তিনি জানান, রাজউকের নিয়মিত তদারকি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ভবনগুলো ইউনিয়ন পরিষদের ছাড়পত্রের ভিত্তিতে নির্মিত হলেও রাজউকের কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়নি।