খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী পদত্যাগের পর এক সপ্তাহ অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এখনো নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ফলে অভিভাবকহীন হয়ে রয়েছে দেশের অন্যতম উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। এতে প্রতিষ্ঠানটিতে দেখা দিয়েছে নানান সংকট।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সব ধরনের আর্থিক ক্ষমতা উপাচার্যের হাতে। তার স্বাক্ষর ছাড়া এক টাকার বিলও পাশ হয় না। কিন্তু অনুপস্থিত ও পদত্যাগ মিলিয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উপাচার্য নেই কুয়েটে। এতে চলতি মাসে ৪৩৩ জন শিক্ষক, ২৩২ জন কর্মকর্তা ও পাঁচ শতাধিক কর্মচারী তাদের বেতন, ঈদ উৎসব ও ভাতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটসোর্সিংয়ের নিরাপত্তা কর্মীর সুপারভাইজার মো. সুমন সরদার বলেন, ‘আমরা স্বল্প বেতনে চাকরি করি। প্রত্যেকের পরিবার আছে। দুই মাস বেতন বন্ধ। সবাইকে ধারদেনা করে চলতে হচ্ছে। দোকানদাররা পাওনা টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। বেতন পাই না, এটা কাউকে বললেও বিশ্বাস করে না। সামনে ঈদ, ছেলেমেয়ে নিয়ে কী করব, দুশ্চিন্তায় আছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক ড. জুলফিকার হোসেন বলেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। উপাচার্য মোহাম্মদ মাছুদ স্যারকে অব্যাহতি দেওয়ার পর, অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য উন্নয়ন কাজের কোনো বিলে স্বাক্ষর করেননি। এখন কোনো উপাচার্যই নেই। ফলে উপাচার্যের স্বাক্ষরের অভাবে ঠিকাদাররা সময়মতো বিল না পাওয়ায় তারা কাজের গতিও কমিয়ে দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে চলমান উন্নয়নকাজ বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কুয়েটের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. আব্দুর রহমান বলেন, এখনো মাস শেষ হতে আরও দুই-তিন বাকি আছে। আশা করি এরই মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষকদের অনাস্থা ও আন্দোলনের মুখে গত ১৯ মে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী দাপ্তরিক কাজের কথা বলে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। এর দুই দিন পর ২২ মে তিনি পদত্যাগ করেন। এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২৫ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরিফুল আলমকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।