নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী ও মিম শরৎ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সোহাগ মিয়াকে (৪২) হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় পটুয়াখালীর পায়রাকুঞ্জ ফেরীঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে স্থানীয় লোকজন সোহাগ মিয়াকে তার ব্যবহৃত গাড়ির ভেতর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে। তাৎক্ষণিকভাবে আহত অবস্থায় তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি গাড়ি জব্দ করেছে। তবে সংশ্লিষ্ট চালকরা পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাজেদুল ইসলাম সজল।
মো. সোহাগ মিয়া নারায়ণগঞ্জের নিউ চাষাড়া এলাকার ৮৯ নম্বর জামতলা রোডের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে।
পটুয়াখালী ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত ৯টার দিকে ব্যবসায়ী সোহাগ মিয়া তার নিতাইগঞ্জের অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে তুলারাম কলেজ গেট এলাকায় পৌঁছালে ৫ থেকে ৬ জনের একটি সন্ত্রাসী দল তার গাড়ির গতিরোধ করে। এরপর তারা গাড়িতে উঠে তাকে জোরপূর্বক হাত, পা ও চোখ বেঁধে ফেলে এবং মারধর করে গাড়ি চালিয়ে পটুয়াখালীর দিকে রওনা হয়।
অপহরণের খবর পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। এরপর রাত থেকেই পুলিশ মো. সোহাগ মিয়াকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। মোবাইল ফোন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তার অবস্থান শনাক্ত করা হয় এবং পটুয়াখালী জেলা পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়।
ধারণা করা হচ্ছে, পুলিশের তৎপরতায় অপহরণকারীরা বেকায়দায় পড়ে যায় এবং আজ সোমবার ভোর ৬টার দিকে পটুয়াখালীর পায়রাকুঞ্জ ফেরীঘাট সংলগ্ন নির্মাণাধীন সেতুর বালির মাঠে গাড়িসহ তাকে ফেলে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর ১২টার দিকে সেখানে দুটি গাড়ি দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে যান তারা। গাড়ির ভেতরে হাত, পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখে তিনি ইশারায় সাহায্য চাইলে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে ডিবি পুলিশ, সদর থানা ও নৌ পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার জানান, অপহরণের অভিযোগ পাওয়ার পরই একাধিক টিম গঠন করে দ্রুত উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। মো. সোহাগ মিয়ার মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে শেষ অবস্থান শনাক্ত করে পটুয়াখালী পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়।