শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

‘ফুটবলের নতুন ইতিহাসের সূচনা হবে এবারের ক্লাব বিশ্বকাপ দিয়ে’

আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, ১৭:০৪

বিশ্ব ফুটবলে শুরু হতে যাচ্ছে নতুন অধ্যায়। এই প্রথমবারের মতো ৩২টি ক্লাব অংশ অংশ নিচ্ছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে। তাতে এর জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে সব মহাদেশে। মেসির ইন্টার মায়ামি বনাম মিশরের সেরা আল আহলি ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে টুর্নামেন্ট, আর তাতেই বোঝা যাচ্ছে, এটা কেবল কোনো শিরোপার লড়াই নয়, বিশ্ব ফুটবলের বৈশ্বিক উৎসব। ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো মনে করেন, রোববার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া ক্লাব বিশ্বকাপ হতে চলেছে ১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপের মতোই ঐতিহাসিক। তার ভাষায়, 'এটা কেবল একটা টুর্নামেন্ট নয়, এটা ফুটবলে এক নতুন যুগের সূচনা।'

উরুগুয়ের মাটিতে ১৯৩০ সালে আয়োজিত হয়েছিল ইতিহাসের প্রথম ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ। ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার মাত্র ১৩টি দল অংশ নিয়েছিল সেই টুর্নামেন্টে। অনেক দেশ তখন ফুটবল বিশ্বমঞ্চে জায়গা করে নিতে পারেনি। কিন্তু ইনফান্তিনোর চোখে এবারকার ক্লাব বিশ্বকাপ সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তের পুনরাবৃত্তি এইবার শুধু জাতীয় দল নয়, গ্লোবাল ক্লাব ফুটবলের জন্য! 

সম্প্রতি আসন্ন এই টুর্নামেন্টটি নিয়ে ইনফান্তিনো বলেছেন, 'আমরা ফুটবলকে সত্যিকারের বৈশ্বিক করতে চাই। এখনো পর্যন্ত এলিট ফুটবল সীমাবদ্ধ ছিল কিছু নির্দিষ্ট দেশ আর ক্লাবের মধ্যে। এবার সেটি বদলাবে। এমন সব দেশের খেলোয়াড়দের আমরা মাঠে দেখব, যারা কখনো জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপে সুযোগ পেত না।'

এ সময় ইনফান্তিনো জানিয়েছেন, ক্লাব বিশ্বকাপ এমন এক মঞ্চ যেখানে ৮০টিরও বেশি দেশের ফুটবলারদের খেলার সুযোগ মিলছে। তার মতে, 'যেসব দেশ কখনো বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নও দেখেনি, এই ক্লাব বিশ্বকাপের মাধ্যমে তারাও এখন বিশ্বকাপের অংশ হতে পারছে। সেই দেশের ফুটবলাররা, সেই ক্লাবগুলোর সমর্থকরা সবাই এই টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রতিনিধিত্ব দেখতে পাচ্ছে, অনুভব করছে।' 

ফুটবল ইতিহাসে অনেক কিংবদন্তি খেলোয়াড়ের নাম এসেছে, যারা কখনো জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি এই প্রসঙ্গেও কথা বলেন ফিফা সভাপতি। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, 'আমার এক খুব ভালো বন্ধু জর্জ উইয়াহ, একজন কিংবদন্তি, অসাধারণ ফুটবলার, ব্যালন ডি'অর জয়ী। এখন পর্যন্ত একমাত্র আফ্রিকান, যিনি এই সম্মান জিতেছেন। অথচ তিনিই কোনো দিন বিশ্বকাপ খেলতে পারেননি। যদি এই ক্লাব বিশ্বকাপের সুযোগ তখন থাকতো, তবে উইয়াহ নিজের ক্লাবের পাশাপাশি তার দেশকেও গর্বিত করতে পারতেন।'

একই সঙ্গে টিকিটিং নিয়ে সমালোচকদের একহাত নিয়েছেন ফিফা সভাপতি। বললেন, 'দাম বেশি হলে সমালোচনা, কম হলে সমালোচনা, শিক্ষার্থীদের ছাড় দিলে সেটাও সমালোচনা! আমি ছাত্র থাকাকালীন এমন সুযোগ পেলে লাফিয়ে যেতাম!' তিনি আরো জানান, টুর্নামেন্টের টিকিট বিক্রি, টিভি সম্প্রচার ও বিশ্ব জুড়ে আগ্রহ দেখে তিনি 'হৃদয় থেকে ইতিবাচক' অনুভব করছেন। ইনফান্তিনোর কথায় স্পষ্ট, তিনি এটিকে শুধু ব্যবসা নয়, বিশ্ব জুড়ে ফুটবলের নতুন এক দিগন্ত হিসেবে দেখছেন। তার ভাষায়, 'যখন খেলা শুরু হবে, তখনই মানুষ বুঝবে যে, এটা কিছু অসাধারণ, এটা নতুন ইতিহাসের সূচনা!'

ইত্তেফাক/জেডএইচ