মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ট্রাম্প-আইএমএফ দুই পায়ের ওপর দাঁড়ানো এবারের বাজেট: আনু মুহাম্মদ

আপডেট : ১৪ জুন ২০২৫, ১৯:০৯

এবারের বাজেট যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এই দুই পায়ের ওপর দাঁড়ানো বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ। এবারের বাজেট বক্তৃতার শিরোনামটিই প্রতারণামূলক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরম খাঁ মিলনায়তনে ‘বাজেট: দেড় দশকের অভিজ্ঞতা ও অর্থনীতির গতিপথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি এই সভার আয়োজন করে।

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অনলাইনে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে বহু উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছিল। তাদের ওপর এবার নতুন করে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ফ্রিল্যান্স আইটি খাতে যেসব তরুণ কাজ করছে, তাদের ওপরও চাপ বাড়ানো হয়েছে। আইএমএফ চাচ্ছে, ট্যাক্স-জিডিপির অনুপাত বাড়াতে। এর ফলে এই উদ্যোক্তারা চাপে পড়ছে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘অন্যদিকে ট্রাম্পকে খুশি করতে বাজেটে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। অস্ত্র আমদানিতে শুল্ক পাঁচ শতাংশ থেকে শূন্য শতাংশে নামানো হয়েছে। তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্যের ওপর ভ্যাট পুরোপুরি উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের আয় কমে গেছে। ঘাটতি পূরণে আবার দেশীয় শিল্পের ওপর কর চাপানো হয়েছে। জনগণের ওপর ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাজেটে আয়ের জন্য ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির কাছ থেকে আমাদের ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে। মাগুরছড়া ও টেংরাটিলায় গ্যাস বিস্ফোরণে সম্পদ ও প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসে যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণ আদায়ে কোনো সরকারই চেষ্টা করেনি। এই ক্ষতিপূরণ আদায় অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু বাজেটে এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই।’

আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এবারের বাজেটে দেখা যাচ্ছে, সুদ সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছে। এটা যদিও বর্তমান সরকারের দোষ নয়। এটার জন্য আগের সরকারই দায়ী। তবে সরকার যদি ঋণ নির্ভরতা কমাতে চায়, তাহলে তাকে জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। অথচ বাজেটে এসব বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই। এর পরিবর্তে আইএমএফের প্রভাবে নীতিগত কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা আসলে অর্থনৈতিক দাসত্বকে দীর্ঘায়িত করবে।’

এবারের বাজেটের মধ্য দিয়ে দেশের আমলাতন্ত্র, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ট্রাম্প প্রশাসনই সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী হবে বলে মনে করেন তিনি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন—ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) অধ্যাপক ড. গোলাম রসুল প্রমুখ।

 

ইত্তেফাক/এনএ