ঢাকাই চলচ্চিত্রের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। অভিনয়ের জাদুতে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ওপার বাংলাতেও নিজের অবস্থান পোক্ত করে নিয়েছেন। দীর্ঘ সময় পর ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে জয়া আহসান অভিনীত দুটি সিনেমা। একটি রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’, অন্যটি তানিম নূরের ‘উৎসব’।
দুটি সিনেমাই দারুণ সাড়া ফেলেছে। হলে দর্শক টানছে। এই দুটি সিনেমায় সম্পূর্ণই ব্যতিক্রমী দুই আমেজ নিয়ে দর্শকের সামনে এসেছেন এই অভিনেত্রী। সেই আমেজ না কাটতেই ভারতের টালিগঞ্জে নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া।
জানা যায়, গত শনিবার (১৪ জুন) মহরতের মধ্য দিয়ে কৌশিক গাঙ্গুলীর ‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’র শুটিং শুরু হয়েছে। প্রথম পর্ব ‘অর্ধাঙ্গিনী’র মতো এবারও জয়ার সঙ্গে থাকছেন কৌশিক সেন ও চূর্ণী গাঙ্গুলী। এই তিনজনের সঙ্গে নতুন পর্বে যুক্ত হচ্ছেন ইন্দ্রাশিস রায়। গল্পের পটভূমি সম্পর্কে জানা যায়, সুমনের (কৌশিক) অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে তার সাবেক স্ত্রী শুভ্রা (চূর্ণী) ও বর্তমান স্ত্রী মেঘনার (জয়া) দেখা হওয়া এবং টানাপোড়েনকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল অর্ধাঙ্গিনীর প্রেক্ষাপট। আগের ঘটনার বছর দুয়েক পর একটা বিয়েকে কেন্দ্র করে আবারও মুখোমুখি হন সুমন, শুভ্রা ও মেঘনা।
‘অর্ধাঙ্গিনী’র মতো এবারের সিনেমাটি নিয়েও আশাবাদী জয়া আহসান। নতুন সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী বলেন, কৌশিকদার সঙ্গে খুব এনজয় করে কাজ করি আমরা। এবারও তেমনটি হবে। কাজের ক্ষেত্রে প্রতিদিন আলাদা অভিজ্ঞতা হয়। অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে আরও উন্নত করি। এতে আবারও চূর্ণী গাঙ্গুলীকে আমার সহশিল্পী হিসেবে পাচ্ছি। তার মতো অভিনেত্রী পাওয়া মানে নিজের চরিত্রের আরও উত্তরণ ঘটা।
‘আজও অর্ধাঙ্গিনী’র শুটিংয়ে যোগ দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত ঈদের দুই সিনেমার প্রচারে ঢাকায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন জয়া। ‘তাণ্ডব’ ও ‘উৎসব’ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহে দারুণ খুশি অভিনেত্রী। এদিকে কলকাতায় ছবির শুটিং শুরুর আগে দুই বাংলার শিল্পীদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন। কোনো রকম বিচ্ছিন্নতা দুই বাংলার শিল্পীদের কাম্য নয় বলেও জানান জয়া।
কলকাতার টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয়া আহসান বলেন, কোনোভাবেই শিল্পীদের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়। কোনোভাবেই কাম্য নয়। শিল্পীদের কাজ হচ্ছে সবকিছু একসঙ্গে করা। আমরা যে রকম বলি গ্লোবাল, গ্লোবালি আমরা যে বেঁচে আছি—সে অর্থে শিল্পীদের তো কোনো ভৌগোলিক সীমারেখা থাকা উচিত নয়। তার ভেতর আমাদের সংস্কৃতি এক, মূল্যবোধ এক, আবেগ-অনুভূতি এক, সেখানে আমরা কেন বিচ্ছিন্ন থাকব! সবচেয়ে বড় কথা—আমাদের ভাষা এক। আমরা বাংলায় কথা বলি। আমাদের চেষ্টাটা সব সময় থাকবে, পৃথিবীর যে কোণে যে বাঙালিই থাকুক, যে বাংলাভাষী মানুষই থাকুক, তাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা—তা আমাদের শিল্পকর্ম দিয়ে। এটার জন্য আমাদের দুই বাংলাকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
কথা প্রসঙ্গে জয়া আহসান তার কথায় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ব্যাপারও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক পটভূমির যে ব্যাপারগুলো, তা যারা দেশের নীতিনির্ধারক আছেন, এসব তাদের সমস্যা। এসব সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে তারাই ঠিক করবেন। আমাদের দুই দেশের জনগণের মধ্যে কোনো বিদ্বেষ, কোনো রকম অসহিষ্ণুতা কখনোই কাম্য নয়, সেটা আমরা হতে দিতে চাই না।