শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ, দিশেহারা খামারিরা

আপডেট : ১৮ জুন ২০২৫, ২১:৪৬

ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা জেলা লালমনিরহাটে হঠাৎ করেই ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD)। ভাইরাসজনিত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে হাজারো গরু ও মহিষ। ওষুধেও কাজ না হওয়ায় মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে গবাদি পশুর খামারিরা। 

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, লাম্পি স্কিন রোগ মানুষের জন্য ক্ষতিকর না হলেও গবাদিপশুর জন্য এটি মারাত্মক সংক্রামক একটি রোগ। এটি ছোঁয়াচে খুব দ্রুত এটি এক পশু থেকে অন্যপশুতে ছড়িয়ে পড়ে। জেলায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত পশুর সংখ্যা। প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত গরুদের জ্বর হয়, শরীর ফুলে ওঠে, ত্বকে গুটি দেখা দেয়, মুখ দিয়ে লালা ঝরে এবং ধীরে ধীরে পশুটি দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পশুর মৃত্যু ঘটে। আক্রান্ত পশুর পাশে সুস্থ পশু থাকলে সেখানেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই আক্রান্ত পশুকে দ্রুত আলাদা স্থানে রেখে চিকিৎসা নিতে হয়। 

এ পরিস্থিতিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা নিয়মিত ক্যাম্পেইন পরিচালনা করছেন। তারা রোগের লক্ষণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সচেতনতামূলক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা পত্র নিয়েও তেমন কোন সুফল মিলছে না বলেও খামারিদের অভিযোগ। এ রোগের চিকিৎসাও অনেকটা ব্যয়বহুল হওয়ায় বড্ড বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র খামারি ও কৃষকরা। 

খামারিদের দাবি, গত ঈদের আগে কোরবানির পশুর হাটে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে আসা ভারতীয় গরুর মাধ্যমে এ রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। জেলার মধ্যে সর্বাধিক ছড়িয়েছে ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া পাটগ্রাম উপজেলায়। সীমান্ত গ্রামগুলো থেকে এ রোগ বেশি ছড়িয়েছে। 

হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা এলাকার খামারি একরামুল বলেন,“এই রোগে গরুগুলো খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়। ওজন কমে যায়। আমরা খুব অসহায় হয়ে পড়েছি। সরকারের কাছে অনুরোধ, যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়।”

হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহমুদুল হাসান বলেন,“আমরা ইতোমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। আক্রান্ত পশুদের আলাদা করে রাখা, কীভাবে পরিচর্যা করতে হবে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়ে খামারিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।আশা করি এই রোগে আগামী ১০/১৫ দিনের মধ্যে শূন্য ডিগ্রিতে চলে আসবে।

ইত্তেফাক/এএইচপি