বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে আসিম মুনির, কঠিন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান 

আপডেট : ২০ জুন ২০২৫, ১২:৫২

পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বুধবারের (১৮ জুন) বৈঠকটিকে এক ধরনের কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে উপস্থাপন করার কথা ছিল ইসলামাবাদের। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার পর, যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা ঘনিষ্ঠ হয়েছে। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইডেন সরকারের সময় ইসলামাবাদের প্রেসিডেন্ট যেখানে একটি ফোন কলও পাননি, সেখানে এখন হোয়াইট হাউজে সরাসরি বৈঠক হচ্ছে, এটা স্পষ্টভাবেই একটা অগ্রগতি। কিন্তু এই বৈঠক এমন এক সময় হলো, যখন ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার কথা ভাবছেন এবং যা পাকিস্তান শুরু থেকেই সমর্থন করেনি।

ট্রাম্প সমর্থন করছেন ইসরায়েলকে, যার কর্মকাণ্ডকে পাকিস্তান 'বর্বরোচিত' হিসেবে ইতোমধ্যে উল্লেখ করেছে। একই সময়ে, পাকিস্তান ইরান থেকে প্রায় তিন হাজার নাগরিককে ফিরিয়ে আনতে একটি বড় উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় ব্যস্ত।

পাকিস্তান ও ইরান সীমান্তবর্তী দেশ। ইরানের সঙ্গে পাকিস্তানের অন্তত এক হাজার কিলোমিটারের সীমান্ত রয়েছে।

বিবিসি বলছে, ট্রাম্পের সঙ্গে আসিম মুনিরের বৈঠকটি দুই ঘণ্টা হলেও তার কোনও অংশ ক্যামেরাবন্দি করা হয়নি। 

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইরান নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তবে কী আলোচনা হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়। এনিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্ন উঠেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে স্পষ্ট প্রশ্ন ছিল, ওই কক্ষে কি কোনো বেসামরিক রাজনীতিক ছিলেন? এরপর প্রশ্ন ছিল, তাহলে আমরা কি গণতান্ত্রিক দেশ?

হালকা হাস্যরসের মধ্যে মুখপাত্র জবাব দেন, পাকিস্তান নিঃসন্দেহে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এরপর ফিল্ড মার্শালের বৈঠক সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে বিদেশি সাংবাদিকদের সেনাবাহিনীর কাছে যেতে বলেন তিনি। 

ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প-মুনিরের বৈঠকে পাকিস্তানের বেসামরিক কোনও কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। মুনিরের সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিক। অন্যদিকে ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত স্টিভ উইটকফ।  

ডনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের জন্য মুনিরকে মধ্যাহ্নভোজ করানো ছিল কৌশলগত। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে মার্কিন হস্তক্ষেপের জন্য ইসরায়েলের 'চাপ' এবং উপসাগরে নীরবে মার্কিন বাহিনী পুনঃস্থাপনের প্রেক্ষাপটে, ট্রাম্প এমন একজন অংশীদার খুঁজছেন যার নৈকট্য এবং গোয়েন্দা গভীরতা রয়েছে। ট্রাম্পের চোখে, পাকিস্তান এর জন্য ফিট। 

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা ইরানকে ভালো করে জানে, সবচেয়ে বেশি জানে। মুনিরের সঙ্গে আলোচনাকে ইঙ্গিত করে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, তিনি (মুনির) আমার সঙ্গে একমত হয়েছেন। তবে কী ব্যাপারে একমত হয়েছে- তা স্পষ্ট করেননি ট্রাম্প। 

ইত্তেফাক/এসআর