চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ২৬ জুন থেকে। দিনের হিসেবে আর মাত্র চার দিন বাকি। এখন যেটার উপর গুরুত্ব দিতে হবে, সেটা হলো রিভিশন। একটা অধ্যায় যত বেশি রিভিশন দেওয়া হবে, তত বেশি ওই অধ্যায় থেকে প্রশ্ন ভুল করার আশঙ্কা কমে যাবে। তাই শেষ মুহূর্তে কার্যকর প্রস্তুতির জন্য নিচের ১০টি পরামর্শ অনুসরণ করলে পরীক্ষার হলে আত্মবিশ্বাস থাকবে দ্বিগুণ।
নির্দেশনাগুলো হলো-
পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার আগে
কলম, পেন্সিল, ইরেজার, প্রবেশপত্র, পরীক্ষা সূচি, বিষয় অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন, ক্যালকুলেটর, জ্যামিতি বক্স ইত্যাদি গুছিয়ে নাও।
আসন গ্রহণ ৩০ মিনিট আগে
পরীক্ষার কেন্দ্রে নির্ধারিত কক্ষে প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য ‘নির্দিষ্ট আসন’ আছে। সেই আসনে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে বসতে হয়। পরীক্ষার প্রথম দিন অবশ্যই সকাল ৯টার মধ্যে পরীক্ষার কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে পরীক্ষার্থীকে। কেননা বসার নির্দিষ্ট আসন খুঁজে বের করতেও সময় লাগবে হবে। অন্যান্য দিন পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে প্রবেশ করলেই হবে। রাস্তায় ‘যানজটের কথা’ মাথায় রেখে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে হবে।
পরীক্ষা কক্ষে ঢোকার পর
কেন্দ্রে মোবাইল বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নিয়ে প্রবেশ করবে না। সঙ্গে বই বা ব্যাগ বহন করলে পরীক্ষা শুরুর আগেই পরীক্ষা তত্ত্বাবধায়কের নির্দিষ্ট করে দেওয়া স্থানে রেখে দেবে। পরীক্ষার সময় বেশি পানির তৃষ্ণা পেলে সঙ্গে পানির বোতল রাখতে পারো। তবে সতর্ক থাকবে বোতল উল্টে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। বোতল উল্টে পানি পড়লে তোমার এবং অন্য পরীক্ষার্থীদের খাতা ভিজে যেতে পারে।
লিখে বৃত্ত ভরাট করা
প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে। পরীক্ষার সময় তোমার উত্তরপত্রের সঙ্গে ‘ওএমআর শিট’ থাকবে। উত্তরপত্রের ‘ওএমআর শিটে’ তোমার পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, বোর্ডের নাম ইত্যাদি যথাযথভাবে প্রথমে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লিখতে হবে। পরে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সঠিক ডিজিটের বৃত্তটি অবশ্যই ভরাট করতে হবে।
উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না
কোনো অবস্থাতেই তোমার এইচএসসি পরীক্ষার খাতা বা উত্তরপত্র ভাঁজ করবে না। উত্তরপত্র ভাঁজ করলে এর সঙ্গে থাকা ‘ওএমআর শিট’ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ক্যালকুলেটর ব্যবহার
পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীর শুধু ‘সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর’ ব্যবহার করতে পারবে। উচ্চতর সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর কোনোভাবেই ব্যবহার করতে পারবে না। সায়েন্টিফিক নন–প্রোগ্রামেবল মডেলের ক্যালকুলেটর যেমন-এফএক্স-৮২এমএস, এফএক্স- ১০০এমএস, এফএক্স-৫৭০এমএস, এফএক্স-৯৯১এমএস, এফএক্স-৯৯১ইএক্স, এফএক্স-৯৯১ইএস, এফএক্স-৯৯১ইএস প্লাস, এফএক্স-৯৯১ সি ডব্লিউ ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। উল্লেখিত মডেলের ক্যালকুলেটর ছাড়াও শিক্ষার্থীরা সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।
হলে ঘাবড়ানো যাবে না
বেশিরভাগ পরীক্ষার্থী পরীক্ষার হলে ঘাবড়ে গিয়ে ভুল করে ফেলে। সে সময় আর সেটা ঠিক করার সুযোগ থাকে না।
পরীক্ষার মাঝে বিরতি থাকবে না
এইচএসসির প্রতিটি বিষয়ের পরীক্ষায় প্রথমে বহুনির্বাচনি অংশ ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) অংশের পরীক্ষা হবে। এই দুই অংশের পরীক্ষার মধ্যে কোনো ধরনের বিরতি থাকবে না।
পৃথকভাবে পাস
এইচএসসি পরীক্ষায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থীকে বহুনির্বাচনি, সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও ব্যবহারিক অংশে (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) পৃথকভাবে পাস করতে হবে।
প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয়ে পরীক্ষা
প্রত্যেক পরীক্ষার্থী শুধু রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও পরীক্ষার প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয় বা যে বিষয়সমূহের উল্লেখ করা আছে, সেসব বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই অন্য বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
স্থানান্তরের মাধ্যমে আসনবিন্যাস
পরীক্ষার সময় কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা নিজ কলেজ বা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে প্রতিটি পরীক্ষার্থীর জন্য ‘আসনবিন্যাস’ করা হবে।
কমন প্রশ্নের উত্তর আগে দেওয়া
হলে যেই প্রশ্ন কমন পড়বে সেটা আগে লিখবে। কেননা সেটা তুমি ঠিক ভাবে লিখতে পারবে। এরপরে যেটা তুমি ভালো পারবে সেটা লিখবে।
উপস্থিতিপত্রে স্বাক্ষর
পরীক্ষার দিন প্রতিটি বিষয়ের বহুনির্বাচনি, সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) ও ব্যবহারিক পরীক্ষার অংশে ‘পরীক্ষার্থীর উপস্থিতিপত্র’ রয়েছে। মনে করে অবশ্যই পরীক্ষার উপস্থিতির জন্য সেই উপস্থিতিপত্রে অবশ্যই প্রত্যেক পরীক্ষার্থী স্বাক্ষর করবে।
লেখা শেষ করে রিভিশন
পরীক্ষার হলে লেখা শেষ করে অবশ্যই রিভিশন দিবে। কেননা অনেক সময় লেখার মধ্যে ভুল থাকে। রিভিশন দিলে সেটা ঠিক হয়ে যাবে।