শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

কবর খোঁড়া শেষ—চলছিল দাফনের প্রস্তুতি, জানা গেল সাবু জীবিত!

আপডেট : ২৩ জুন ২০২৫, ১০:০১

কবর খোঁড়া শেষ হলো। চলছিল দাফনের প্রস্তুতি। দাফনের ঠিক আগ মুহূর্তে জানা গেল, যাকে দাফন করা হচ্ছে তিনিই বসে আছেন বাজারে! তারপর চারদিকে শুরু হলো হইচই।

রোববার (২২ জুন) সকালে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার ৬নং সুলতানপুর ইউপি ব্রাহ্মণগ্রাম (এতিছানগর) গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এক অজ্ঞাত ব্যক্তি। পরে ওই লাশটি নিজের বড় ভাই শিহাব উদ্দিন সাবুর মরদেহ (৫৫) দাবি করে বাড়িতে নিয়ে যান ছোট ভাই বাবুল আহমদ। বাড়িতে নিয়ে লাশের দাফন ও কবর খোঁড়ার ঠিক আগ মুহূর্তে জানতে পারেন সাবু আহমদ জীবিত আছেন। তিনি স্থানীয় বাজারে বসে আছেন। এ ঘটনায় পুরো জকিগঞ্জ উপজেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

মরদেহের ছোট ভাই পরিচয় দাতা বাবুল আহমদ জানান, তার বড় ভাই সাবু আহমদ একজন মানসিক রোগী। গত এক সপ্তাহ ধরে তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলেন না। শনিবার রাত ১০টার দিকে ফেসবুকে ছবি দেখে জানতে পারেন তার ভাইয়ের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। পরে আত্মীয়স্বজনসহ তিনি হাসপাতালে এসে তার বড় ভাই ভেবে বাড়িতে নিয়ে দাফন কাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রাতে তাদের এক পরিচিতজন জানান তার ভাই সাবু আহমদ বেঁচে আছেন এবং স্থানীয় গঙ্গাজল বাজারে আছেন।

পরে তিনি হাসপাতালে লাশটি ফেরত দিতে চাইলে জকিগঞ্জ জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের নেতা মিজানুর রহমানের অনুরোধে লাশ দাফনের জন্য নিয়ে আসেন।

জানাজার ইমাম জকিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা জালাল উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, রোববার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় এতিছানগর জামে মসজিদে জানাজা শেষে বাবুর বাজার সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়। আমি ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলে মানবিক দিক চিন্তা করে জানাজা পড়াই এবং দাফনের জন্য বলি।

জকিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মো. আব্দুল আহাদ জানান, অজ্ঞাত পরিচয়ে চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করার পর আমরা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় লাশ সিলেটে পাঠানোর উদ্যোগ নেই। ঠিক তখনই লাশের ভাই ও আত্মীয়স্বজন পরিচয়ে লোকজন এসে লাশটি নিয়ে যান। এখন শুনছি ওই ব্যক্তি নাকি তাদের কেউ না।

জকিগঞ্জ থানার ভাররপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, একজন অজ্ঞাত পরিচয়ের লোক চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা গেছেন। পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা করার আগেই ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।   

ইত্তেফাক/এপি