শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

‘জোর করে চেয়ারে বসিয়ে দেওয়ায়’ সহকর্মীর বিরুদ্ধে অধ্যাপকের লাঞ্ছনার অভিযোগ

আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:৫৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের এক সিনিয়র অধ্যাপককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে একই অনুষদের এক সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার, অনুষদের ডিনের কক্ষে অনুষ্ঠিত ২৯তম সাধারণ সভায়।

অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুস ছালাম চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বেও আছেন।

অভিযোগকারী চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক আবদুস সোবাহান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচারকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

লিখিত অভিযোগপত্রে আবদুস সোবাহান উল্লেখ করেন, ‘গত বুধবার চারুকলা অনুষদের অধিকর্তার কক্ষে অনুষদের ২৯তম সাধারণ সভা চলাকালে অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোতে সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সসহ চারুকলায় ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রোগ্রাম চালুর প্রসঙ্গ উপস্থাপিত হলে আমি মতামত দিই। মনে হয়েছে, সান্ধ্যকোর্স চালু হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের স্বকীয়তা বিনষ্ট হতে পারে। তাই আমি বলি, সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সসহ ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট প্রোগ্রামের বিষয়গুলো বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় চালু হয়েছিল। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিষয়টি বলায় মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক অধ্যাপক মোস্তফা শরীফ আনোয়ার আমার সঙ্গে উচ্চ স্বরে কথা বলেন। বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে আমার উচ্চবাচ্য হয়।’

সোবাহান আরও যুক্ত করেন, ‘ওই সময় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুস ছালাম আমার মতামতকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, “একে বের করে দেওয়া হোক।” যা সম্পূর্ণভাবে তার এখতিয়ারের বাইরে। এ সময় আমি দুই পা সামনে এগিয়ে গিয়ে বলি, তুমি আমাকে বের করে দিতে বলার কে? ওই মুহূর্তে আবদুস ছালাম উত্তেজিত হয়ে আমার কোমর জাপটে ধরে ওপরে তোলেন এবং বল প্রয়োগ করে চেয়ারে বসিয়ে দেন।’

এ বিষয়ে আবদুস সোবাহান বলেন, ‘সব সহকর্মীর সামনে এ ধরনের শারীরিক লাঞ্ছনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন এবং একজন অধ্যাপক হিসেবে আমার জন্য অত্যন্ত অপমানজনক।’

অভিযুক্ত মোহাম্মদ আবদুস ছালাম বলেন, ‘উনাকে (আবদুস সোবাহান) চেয়ারে বসিয়েছি, এটা সত্য; তবে লাঞ্ছনার উদ্দেশ্যে নয়। সভায় একটি বিষয়ে সবাই যখন একমত, তখন তিনি একা ভিন্নমত পোষণ করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। সেখানে তিনি রাজনৈতিক বক্তব্যের মতো কথা বলেছেন, যদিও সেটা কোনো রাজনৈতিক ক্ষেত্র ছিল না। তখন আমি উনাকে থামাতে ডিনকে অনুরোধ করি।’

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আলোচনার এক পর্যায়ে একজন শিক্ষকের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাপক সোবাহান উত্তেজিত হয়ে সভার এজেন্ডাবহির্ভূত অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তা বলতে শুরু করেন। তখন তাকে আস্তে কথা বলতে বলেন সহযোগী অধ্যাপক ছালাম। এতে সোবহান উত্তেজিত হয়ে ছালামের দিকে তেড়ে যান। তখন আমি ও ছালামসহ কয়েকজন শিক্ষক উনাকে (সোবাহান) তার জায়গায় গিয়ে কথা বলতে বললে তিনি আপত্তি করেন। তখন ছালাম পরিস্থিতি সামাল দিতে সোবাহানকে কোলে করে তার জায়গায় নিয়ে বসিয়ে দেন।’

ইত্তেফাক/এনএন