শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

‘ছাত্রী মোটা না চিকন’ দেখতে চাওয়া সেই শিক্ষক সাময়িক বরখাস্ত

আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ১৯:৫৩

ইমোতে ছাত্রীকে ‘মোটা না চিকন’ এমন আপত্তিকর মন্তব্য করে দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, হোয়াটসঅ্যাপ-ম্যাসেঞ্জারে ছাত্রীদের উদ্দেশে চলতো কুরুচিপূর্ণ বার্তা ও ভিডিও কলের মাধ্যমে অশালীন কথাবার্তা। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

শনিবার (৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হকের সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়। একই সঙ্গে আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, ক্লাসে পোশাক ও শরীর নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, অনৈতিক বার্তা পাঠানো এবং ভিডিও কলে আপত্তিকর আলাপচারিতার মতো একাধিক অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় উঠেছে, পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমেও তা প্রকাশিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। ফলে প্রশাসন তাকে ৫ জুলাই থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল ইসলাম

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে—আজিজুল ইসলাম ছাত্রীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নোংরা কৌতূহল প্রকাশ করতেন, তার পছন্দ না হলে ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষায় ফেল করাতেন এবং পছন্দের ছাত্রীদের নিজের গবেষণার অধীনে কাজ করতে বাধ্য করতেন।

এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি বরাবর গত ২২ জুন লিখিত অভিযোগ দেন কয়েকজন ছাত্রী। এরপর ২৮ জুন তাকে বিভাগের সব ধরনের একাডেমিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা এতে অসন্তুষ্ট থেকে তার স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আন্দোলনে নামে এবং ২ জুলাই উপাচার্যের কাছে নতুন করে অভিযোগ জমা দেয়।

ঘটনার তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে আল-ফিকহ অ্যান্ড ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজিমুদ্দিনকে। অন্যান্য সদস্যরা হলেন—লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. খোন্দকার আরিফা আক্তার এবং আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাকসুদা আক্তার। কমিটিকে আগামী ২০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. নাজিমুদ্দিন বলেন, আমরা চিঠি পেয়েছি। তদন্ত একটি আইনগত প্রক্রিয়া, যথাযথভাবে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে নির্ধারিত সময়েই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/এনএ