বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জি কে শামীমের ১৮০ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৩৩৭ কোটি টাকা

আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২০, ০৯:৩১

আলোচিত ঠিকাদার ও যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে অভিযুক্ত করে অর্থ পাচার মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সিআইডি। এতে বলা হয়েছে, জি কে শামীমের ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে ৩৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে। ঢাকায় দুটি বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির মালিক তিনি। এসব সম্পত্তির মূল্য ৪১ কোটি টাকা। যা বর্তমানে ক্রোক অবস্থায় রয়েছে। বুধবার শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় অন্যান্য আসামি জি কে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত থেকে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি প্রদর্শন, পরস্পর যোগসাজশে সংঘবদ্ধ অপরাধ করার মাধ্যমে টেন্ডারবাজিতে সহায়তা এবং বিভিন্ন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে রয়্যালিটি ফি গ্রহণ করে ও জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাটবাজারে চাঁদাবাজি করে অপরাধলব্ধ এই অর্থ আয় এবং বিদেশে পাচারের লক্ষ্যে মজুত করেছেন। যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির অর্গানাইজড ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আবু সাঈদ জানান, অপরাধমূলক ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এসব আয় করা অর্থ শামীম বিদেশে পাচারের চেষ্টা করছিলেন। এ সংক্রান্ত দালিলিক প্রমাণ পেয়েই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, জি কে শামীম ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তার জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের একক ও যৌথ নামে ১৫৪টি প্রকল্প পরিচালনা করে। এর মধ্যে ৬১টি প্রকল্প সমাপ্ত করে। ৯৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ পর্যালোচনা করে জানা যায়, গত ১০ বছরে শামীমের কোম্পানির নামে ১৫৪টি প্রকল্প অনুমোদন হয়। যার চুক্তিমূল্য ৫ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬১টি প্রকল্পে ৭৪৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখনো ৯৩টি প্রকল্পে ৪ হাজার ৮১০ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, জি কে শামীমের ব্যাংক লেনদেনে সর্বমোট ক্রেডিট হয় ৩ হাজার ৪২ কোটি ৮৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯১ টাকা। আর ডেবিট হয়েছে ৩ হাজার ১৫ কোটি ৬৬ লাখ ৩ হাজার ৭৫১ টাকা। আর ১৮০টি ব্যাংক হিসাবে এফডিআরসহ ৩৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ টাকা স্থিতি রয়েছে।

অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন—শামীমের দেহরক্ষী মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৯), মো. মুরাদ হোসেন (৫২), মো. জাহিদুল ইসলাম (৪১), মো. শহিদুল ইসলাম (৩৬), মো. কামাল হোসেন (৪৯), মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আমিনুল ইসলাম (৩৪)।