বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শিশুদের জন্য আলাদা আদালত হওয়া উচিত: বিচারপতি ইমান আলী

আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০১৯, ২০:৩৩

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. ইমান আলী বলেছেন, 'শিশু-কিশোরদের অপরাধের বিচারের জন্য আদালতের পরিবেশ শিশু বান্ধব হওয়া উচিত। কারণ শিশুদের বিচার হবে সংশোধনের উদ্দেশ্যে, শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে নয়। শিশু আর প্রাপ্ত বয়স্ক অপরাধীর বিচার এক রকম নয়। প্রাপ্ত বয়স্ক অপরাধীর ক্ষেত্রে আইনের উদ্দেশ্যে থাকে শাস্তি দেওয়া। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে সেটি নয়।' শনিবার সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স কক্ষে ‘শিশু আইন-২০১৩’ নিয়ে বিভাগীয় পরামর্শ সভায় বিচারপতি ইমান আলী এসব কথা বলেন। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ বাংলাদেশ) এবং সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি অন চাইল্ড রাইটস যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের উদ্দেশ্য হচ্ছে অপরাধীকে বেশি করে শাস্তি দেওয়া। ধর্ষণ ও হত্যা হলে অপরাধীকে ফাঁসি দেবেন আপনারা। কিন্তু আপনারা যখন চেম্বারে বসে শিশুর বিচার করবেন তখন সবসময় তার মঙ্গলের কথা চিন্তা করতে হবে। উদ্দেশ্য থাকবে শিশুটির যাতে পুনর্বাসন ও সংশোধনের সুযোগ পায়। শিশু অপরাধ করেছে বলে খারাপ হয়ে গেছে জেলে দাও এই মনোভাব পোষণ করলে চলবে না। কি করলে শিশুর ভালো হবে সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ শিশুরা অপরিপক্ব, অপ্রাপ্তবয়স্ক। আমার ব্যক্তিগত অভিমত শিশুদের কনফেশান (দোষ স্বীকার জবানবন্দি) নেওয়াই উচিত নয়। যদি কোনো কারণে নিতেই হয়, তবে অবশ্যই তা বাবা-মার সামনে নিতে হবে।  

বিচারপতি ইমান আলী বলেন, শিশু আইনের অসঙ্গতি ও বিভ্রান্তি নিরসনে হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি রায় দিয়েছে। ওই রায়ে শিশু আদালতকে বিচারের ক্ষেত্রে সাত দফা কার্যপদ্ধতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। শিশু আইনের বিদ্যমান অসঙ্গতি নিরসন না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের রায়টি আইন হিসেবে গণ্য হবে। 

আরও পড়ুন:  ১১ হাজার ভোল্ট বিদ্যুতের খুঁটি ভেতরে রেখেই ভবন নির্মাণ

হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, শিশুকে অপরাধী বলা যাবে না। শিশু যদি আসামি বা সাক্ষী হয়,তাহলে তার ছবি ও পরিচিতি গণমাধ্যমে দেখানো উচিত নয়। কারণ যখন কোন অপরাধে কোন শিশুর সাজা হয় তখন তা খুব বেশি হয় না। ফলে সমাজে পুনর্বাসনের সুযোগ দিতেই ছবি ছাপানো উচিত নয়। শিশুদের বিচারে ক্ষেত্রে বিচারকদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে হাইকোর্টের বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, বরিশাল, খুলনা ও সিলেট বিভাগের বিচারক ও পাবলিক প্রসিকিউটররা অংশ নেন।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি