শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শেয়ারবাজারে দরপতন নয়, সংশোধন হচ্ছে: বিশেষজ্ঞ

আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১৮:৩৯

চলতি সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার (২৫ অক্টোবর) দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসইতে সূচক কমেছে ১২০ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে ৪২৬ পয়েন্ট। যা গত ৬ মাস ২১ দিনের মধ্যে উভয় পুঁজিবাজারে সর্বোচ্চ সূচক পতন।

পুঁজিবাজারের এমন পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে দেশের বিনিয়োগকারীরা। তারা মনে করছেন শেয়ারবাজার আবারো ধসের মুখে পড়তে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অনেকেই লোকসান হলেও পুঁজিবাজার ছেড়ে দিতে চাইছেন। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনৈতিক বিভাগের শিক্ষক আবু আহমেদ ইত্তেফাক অনলাইনকে জানান, পুঁজিবাজার উঠানামা করবে এটাই স্বাভাবিক। গত কয়েক মাস আগে রাতারাতি যেভাবে সূচক উর্ধ্বমুখী ছিলো তখনই একটা ভয় কাজ করছিলো। সেখান থেকে মার্কেট কারেকশন হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আমার কাছে মনে হয় কারেকশনটা একটু বেশিই হয়ে গেছে। 

                         No description available.

ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে আবু আহমেদ বলেন, অনেকেই অতিলোভের আশায় না বুঝেই শেয়ার কিনে থাকেন। আমি মনে করি তারা যে খুব বেশি লাভবান হচ্ছে তা নয়। তার মূল কারণ, তারা হুট করে বেশি দামের শেয়ার কিনলেও ঐ সব বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ভালো না। 

তবে দেশের পুঁজিবাজার অস্থিতিশীল হওয়ার পেছনে জুয়াড়িদেরই দায়ী করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক। তিনি মনে করেন, জুয়াড়িরা নাম সর্বস্ব কিছু শেয়ারের দাম বাড়িয়ে তারা বড় ধরনের লাভ নিয়ে মার্কেট থেকে চলে যায় আর ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ঠিকমতো মার্কেট না বুঝায় তেমন লাভবান হতে পারেন না। 

                             No description available.

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী ইত্তেফাক অনলাইনকে বলেন, মার্কেট যথেষ্ট কারেকশন হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই মূহুর্তে যারা ধৈর্য ধরে থাকতে পারবে তারা হয়তো লাভবান হবে। তবে খারাপ কোম্পানিগুলোর শেয়ার বাড়ার সম্ভাবনা ‍খুবই কম। 

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা দেখি, শেয়ারবাজার সম্পর্কে প্রাথমিক কোনো ধারণা ছাড়াই বিনিয়োগকারীরা বাজারে বিনিয়োগ করে বসেন। এ কারণে তাদের বেশি লোকসান হয়। শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের আগে অবশ্যই এই বাজার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা উচিত।

বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাজারের সূচক ও শেয়ারের দামের উত্থান-পতন অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রবণতা। কোম্পানিগুলোর কোনো লাভ না হলেও ইনডেক্স বাড়ানো হয়েছে। এতে অনেক কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়ে গেছে। এ ধরনের বাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা দরকার।

পুঁজিবাজারে বেশ কিছুদিন ধরে চলমান মন্দার বিষয়ে সাবেক এই চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের বাজারে প্রায়ই দেখা যায়, কিছু কিছু কোম্পানির শেয়ারের দাম যৌক্তিক কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। তাতে অনেক বিনিয়োগকারী দ্রুত লাভের আশায় সেসব শেয়ারে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এটি খুবই ভুল সিদ্ধান্ত। বরং সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া যখন কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ে, তখন সেখানে বিনিয়োগ থেকে বিরত থাকা উচিত।

তাই দাম বাড়তে থাকলে কোনো খোঁজখবর না নিয়ে কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করা উচিত না। বিনিয়োগকারীদের মনে রাখতে হবে, কারসাজিকারীরা তাঁদের স্বার্থেই কারসাজির ঘটনা ঘটান। দাম বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করা তাঁদের একধরনের কৌশল।

ইত্তেফাক/এসআই