শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

নির্বাচন ও সংসদ বর্জন করে বিএনপি কোন অর্জন করতে পারেনি: নাসিম

আপডেট : ০৮ মার্চ ২০১৯, ১৭:১৯

আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেছেন, ‘নির্বাচন ও সংসদ বর্জন করে বিএনপি কোন অর্জন করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। তাদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের সংসদে এসে জনগণের কথা বলা উচিত।’

শুক্রবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে কঠোর থাকারও তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা যা করণীয় আপনারা করবেন। এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। কোনো প্রার্থীর মুখ দেখে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সবাইকে সুলতান মো. মনসুর আহমেদের মত শপথ নিয়ে জাতীয় সংসদে এসে সরকারের কঠোর সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘আমরা আশা করবো বিএনপিসহ অন্য দলের নির্বাচিতরা সংসদে আসবেন। সংসদে এসে সরকারের ভুল ধরিয়ে দেবেন। সরকারের কঠোর সমালোচনা করবেন। এই পথে আপনাদের থাকতে হবে। অন্য পথে শুধু প্রেস ব্রিফিং করে, নামকাওয়াস্তে কয়েকটি লোক দেখানো আন্দোলন করে আপনাদের নেত্রীকে মুক্ত করতে পারবেন না।’

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি নিজেদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন বর্জন করে গত কয়েক বছরে তারা নির্বাচন ভণ্ডুল করতে পারেনি। আবারও তারা নির্বাচন বর্জন করে ভুল পথে গিয়ে দলকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বর্জনের পথ পরিহার করে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনতে বাধা সৃষ্টি করবেন না। আগামী নির্বাচনে, স্থানীয় নির্বাচনে জনগণ বিপুলভাবে অংশগ্রহণ করবে।’

এদিকে ১৪ দলের পক্ষ থেকে মার্চ মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন জোটের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, ‘১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে ১৪ দল। ১৯ মার্চ হবে আলোচনা সভা। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে স্মরণ সভা করা হবে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন এবং ২৮ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা করবে ১৪ দল।’

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ করা হচ্ছে। এটা দুঃখজনক। তিনি কোনো ধর্মকে নিয়ে কটাক্ষ করেননি। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘রাশেদ খান মেনন একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, একজন বিজ্ঞ পার্লাামেন্টারিয়ান। পার্লামেন্টে তিনি বক্তব্যে যে কথাটি বলেছেন, সেই কথাটির ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আজকে তথাকথিত ধর্মান্ধ একটি দল আবার মাঠে নেমেছে। তারা তার বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, রাশেদ খান মেনন একটি গণতান্ত্রিক দলের প্রধান। তিনি অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন। তিনি কোনভাবে ধর্মকে নিয়ে কোনো কটাক্ষ করেন নাই। প্রধানমন্ত্রী কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দেওয়ায় তিনি বরং প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, এর মাধ্যমে যেন কোনো সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়া না হয়। কোন ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি করা না হয়, এটা তিনি ষ্পষ্ট বলেছেন। কিন্তু তার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে আজকে এই চেনা মহলটি আবার মাঠে নেমেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না। কারণ আমরা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি করি। যার যার ধর্ম সেই পালন করবে, এটা বিশ্বাস করি। এই দেশে কোনদিন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি হবে না, এটা অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ।’

পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গোডাউন অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। আর কোনো আপোষ করা যাবে না। কোন অজুহাত শোনা হবে না। মানুষের মৃত্যু নিয়ে আর কোনভাবেই খেলা করা উচিত না।’

আরও পড়ুনঃ মানিকগঞ্জে মাটির ট্রাকচাপায় কলেজ ছাত্রের মৃত্যু

মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, সম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, গণতন্ত্রী পার্টির ডা. শাহাদাত হোসেন, গণআজাদী লীগের এসকে শিকদার, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. অসীত বরণ রায়, বাসদের রেজাউর রশীদ খান, জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এজাজ আহমেদ মুক্ত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিলীপ রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইত্তেফাক/নূহু