শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শিকল দিয়ে বেঁধে ১০ বছরের শিশুকে নির্যাতন

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২০, ০১:৪৫

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের একুশের মোড় এলাকায় সৎমা (বিমাতা) ও সৎ ভাইদের বিরুদ্ধে শিকলে বেঁধে ১০ বছরের শিশু অঞ্জনাকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্যাতনে শিকার হওয়া শিশুটি পালিয়ে ফুপুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, বয়ড়া একুশের মোড় এলাকার ছলিম উদ্দিমের ছেলে রফিকুল ইসলাম দুটি বিয়ে করেন। কয়েক বছর আগে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ হয়। এর পরে দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরের  ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে তার বাবার কাছেই থাকে। গত ২২এপ্রিল বুধবার বিকেলে রফিকুলের প্রথম স্ত্রী ও (শিশু কন্যা অঞ্জনার) বিমাতা বকুল বেগম (৪০) তাকে রান্নার লাকড়ি কুড়িয়ে আনতে বলেন। এ নিয়ে মা ও মেয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিমাতা বকুল বেগম,ও সৎ ভাই রতন, মনি ও বিপুল তাকে লোহার শিকল দিয়ে বেঁধে মারধর শুরু করে।

শিশুটি গত ২৩এপ্রিল বৃহস্পতিবার শিকলসহ পালিয়ে ডোয়াইল ইউনিয়নের ডিক্রির বন্দ তার ফুপু সেলিনা বেগমের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে ওই বাড়ির লোকজন তার হাত-পায়ের শিকল হ্যাক্সোব্লেড দিয়ে কেটে দেয়। সৎ মার নির্যাতন সইতে না পেরে ওই শিশুটি এতটা পথ পায়ে হেঁটে চলে যায়।  

নির্যাতিতা শিশুটি জানায়, আমার সৎমা রেগে গলা চেপে ধরে। আমি কান্নাকাটি করলে লোহার শিকল দিয়ে দুটি তালা দিয়ে আমার হাত ও পা বাঁধে। তারপর সৎমা ও ভাই মিলে মারধর করে। সারারাত কিছু খেতে দেয়নি। শিশুটি আরো জানায়, কান্নাকাটি করলে তারা আমাকে ছালার মধ্যে ভরে পানিতে ফেলে মেরে ফেলার ভয় দেখায়।

অঞ্জনার ফুফা আব্দুল বারিক জানান, শিশুটি আসার পর তাকে শিকল থেকে মুক্ত করে খাবার দেওয়া হয়। বর্তমানে সে আমার আশ্রয়ে রয়েছে। 
শিশুর বাবার সাথে কথা বলতে চাইলে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। অভিযুক্ত মা বকুল বেগম নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মেয়েটি পাগল ও দুশ্চরিত্রা, তাই তাকে একটু গালাগাল করা হয়েছিল।

সরিষাবাড়ী থানার তারাকান্দি পুলিশ  তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক মোহব্বত কবীর বলেন, শিশু নির্যাতনের কোনো অভিযোগ পাইনি, পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক এলাকার ব্যাক্তিদের সামনে শিশুর মা ভাইদের মুচলেকা লিখে নিয়েছি। তারা মারধর করবে না মর্মে। এছাড়া ৫ হাজার টাকা দিয়েছি সমাজ সেবা ফান্ড থেকে ভরণ পোষণের  জন্য।পরিস্থিতি শান্ত হলে তাকে সরকারি শিশু সদনে ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান।

ইত্তেফাক/কেকে