বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অবশেষে বীরাঙ্গনা পাতাসীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি লাভ

আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:২৯

মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও রাজকারদের হাতে পাশবিক নির্যাতনের শিকার তাড়াশের বীরাঙ্গনা​ পাতাসী অবশেষে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৬০তম সভায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাগুড়াবিনোদ গ্রামের মৃত ছমির প্রামানিকের স্ত্রী পাতাসী বেওয়াকে (৭০) মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া হয়।

 

বীরাঙ্গনা পাতাসী জানান, ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর স্থানীয় রাজাকারদের সহযোগিতায় তাকে নিজ বাড়ি থেকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যায় সামরিক ক্যাম্পে। পরে তাদের দ্বারা সেখানে তিনি পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন।

 

তিনি আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরে চার ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে তিনি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্বাধীনতার ৪৮ বছর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ ও শেষ পাওয়া।

 

পাতাসী বেওয়ার মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্তির বিষয়টি তাড়াশ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের কমান্ডার গাজী আরশেদুল ইসলাম নিশ্চিত করে বলেন, ২০১৪ সালের ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। পরে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে ওই প্রস্তাব পাশ হয়।

 

প্রসঙ্গত, ১৯৭২ সালে নির্যাতিত নারীদের অবদান মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে কম নয় বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের বীরাঙ্গনা স্বীকৃতি দিয়ে সেসময় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, “আজ থেকে পাকবাহিনী কর্তৃক নির্যাতিত মহিলারা সাধারণ মহিলা নয়, তারা এখন থেকে বীরাঙ্গনা খেতাবে ভূষিত।” বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সে সময় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের চার দশক পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

 

ইত্তেফাক/এএম