শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

'যৌন হয়রানিমূলক' ফোনালাপ ফাঁস করায় নারীকে কারাদণ্ড

আপডেট : ০৮ জুলাই ২০১৯, ০৯:৪৪

যৌন হয়রানির প্রমাণ হিসেবে নিজের 'বস' এর সঙ্গে হওয়া ফোনালাপ রেকর্ড করা এবং তা ছড়িয়ে দেয়ার দায়ে ইন্দোনেশিয়ার এক নারীর ছয় মাসের কারাদণ্ডের শাস্তির বিরুদ্ধে করা আবেদন  বাতিল করেছে ইন্দোনেশিয়ার শীর্ষ আদালত। খবর বিবিসির। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট বাইক নুরিল মাকনুন নামের ওই নারীর বিরুদ্ধে 'অশালীন' জিনিসপত্র ছড়ানোর অভিযোগ এনেছে। 
ফোনালাপটি ছড়িয়ে পড়ার পর ২০১৫ সালে ওই নারীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেন তার বস।

আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলো। 

ঘটনার বিস্তারিত সম্পর্কে জানা যায়, লম্বক দ্বীপের মাতারাম শহরের একটি স্কুলে কাজ করতেন নুরিল, যেখানকার প্রধান শিক্ষক তাকে ফোন করে যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলতেন বলে অভিযোগ করেন নুরিল।

নুরিল একদিনের ফোনালাপ রেকর্ড করে ছড়িয়ে দেন, যেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আপত্তিকর এবং অশালীন মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

পরবর্তীতে স্কুলের অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যেও রেকর্ডিংটি ছড়িয়ে দেয়া হয় এবং পরে তা স্থানীয় শিক্ষা বিভাগের কাছেও পৌঁছে যায়। সামাজিক মাধ্যমেও কিছুদিনের মধ্যেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক - আদালতের নথি অনুযায়ী ঐ রেকর্ডিং ছড়িয়ে পড়ার পরপরই যার চাকরি চলে যায় - তার আর নুরিলের ফোনালাপ ছড়িয়ে দেয়ার কারণে পুলিশের কাছে নুরিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

নভেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার ইলেকট্রনিক ইনফরমেশন ও ট্রানসেকশন আইনে নুরিলকে 'শালীনতা লঙ্ঘন' করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে সুপ্রিম কোর্ট।

নিজের পক্ষে নতুন কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে না পারায় এই রায়ের বিরুদ্ধে করা নুরিলের আবেদনও গত বৃহস্পতিবার নাকচ করে দেয় আদালত।

আদালতের মুখপাত্র আব্দুল্লাহ সংবাদ সংস্থা এএফপি'কে জানায়, ‘তার (নুরিলের) জুডিসিয়াল রিভিউ বাতিল করা হয়েছে কারণ তার অপরাধ আইনত এবং নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’ 

এছাড়া ৫০ কোটি রুপিয়া (৩৫ হাজার ২০০ ডলার) অঙ্কের জরিমানার শাস্তিও অক্ষুন্ন রেখেছে আদালত।

এই ঘটনা ইন্দোনেশিয়ায় ব্যাপক জনরোষ তৈরি করেছে।

আরো পড়ুন: ভারতে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনা, নিহত ২৯

মানাবধিকার সংস্থাগুলো সতর্ক করে বলেছেন, এই রায় যৌন হয়রানির শিকার হওয়া ব্যক্তিদের জন্য ভীতিকর একটি বার্তা দিচ্ছে। 

ইত্তেফাক/এসআর